শনিবার (২৮ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়াসহ কয়েকজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে সরকারের আইন-আদালতের নিয়মনীতির বিরুদ্ধ আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে বিচারের নামে সরকারি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া আহ্বান জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জাববে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা জানাব রায় ঘোষণা হওয়ার পরে। পুরো বিষয়টা আমরা আবার জানাব রায় ঘোষণা হলেই। ’
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় ঘোষণা করবে ঢাকার পঞ্চম জজ আদালত। বিএনপি-জামায়াত জোটের ২০০১-০৬ মেয়াদে সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের এ মামলার প্রধান আসামি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ রায়ের তারিখ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গোটা জাতি উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ। এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এবং সকলের অংশগ্রহণে ইনক্লুসিভ ইলেকশন নষ্ট করার জন্য এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্র। ’
তিনি বলেন, ‘২৫ জানুয়ারি বিশেষ জজ আদালতে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য হঠাৎ সমাপ্ত করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবীদের মতে, এমন ঘটনা শুধু অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত নয়, রহস্যজনক। ’
‘জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও দেশনেত্রীকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখার জন্য দ্রুত রায় ঘোষণা সেই অপচেষ্টার অংশ বলেই দেশবাসী মনে করে। ’
এ মামলা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এইচএম এরশাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যে রায় কী হবে সে সম্পর্কে ইঙ্গিত রয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকলেও তার রায় কী হবে তা সরকার ও সরকারি দলের জানা আছে বলেই মনে হয় তাদের বক্তব্যে। ’
‘স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে যে, জাল-জালিয়াতি করে বিচারের নামে প্রহসন ও বিরোধী পক্ষকে দমন করার জন্য আদালতকে ব্যবহার করার আরেকটি নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এমন আচরণে দেশের জনগণ আজ ক্ষুব্ধ ও ক্রুদ্ধ। ’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
এএম/জিপি