তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, সময় মতো গাজীপুরের মেয়র প্রার্থীকে তুলে নেবে জামায়াত।
বিএনপির তৃণমূল ও সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুই সিটির নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা।
জানতে চাইলে খুলনা সিটির সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, আমি আশা করি না যে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তবে জনগণ আমাদের পক্ষে আছে। নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে নির্বাচন করে আর জনগণ যদি ভোট দিতে পারে তাহলে দুই সিটিতেই আমাদের প্রার্থী জয়ী হবে।
নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না জেনেও কেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম বোঝার জন্য। নির্বাচন না করলেও তো আমাদের সমালোচনা হবে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, দলীয় চেয়ারপারসন জেলে থাকলেও কৌশলগত কারণে তারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিলেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এমন কোনো শর্ত দেয়া হয়নি। ফলে ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিত সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনেই তারা প্রার্থী দিয়েছেন। তবে তাদের অভিযোগ, সরকারি দলের প্রার্থীদের পক্ষে প্রশাসন কাজ করায় এবং দলীয় ক্যাডার বাহিনীর ভোট কারচুপির কারণে বিগত দিনে অধিকাংশ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। তাদের দাবি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এবং জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে বিএনপির প্রার্থীরাই জয়ী হতো।
জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সমন্বয়ক দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছি। কমিটিও করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক প্রচারাভিযান শুরু হবে প্রতীক পাওয়ার পর।
নির্বাচন কতটা সুষ্ঠু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চাই এই নির্বাচন সুষ্ঠু হোক। এখন নির্বাচন কমিশন কতটা সুষ্ঠু করবে তারাই বলতে পারে। সরকারের ক্ষমতা আছে তারা চাইলে জোর করে নিতে পারে। কিন্তু তার পরিণতি ভালো হবে না। সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই সময় যদি দুই সিটির নির্বাচন সুষ্ঠু না হয় তাহলে কি হবে তা আপনারাই ভালো বলতে পারেন।
গাজীপুরে জামায়াতের প্রার্থীর বিষয়ে জানতে চাইলে ড. মোশাররফ বলেন, এটা শিগগিরই মীমাংসা হয়ে যাবে। আগামী ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। তার আগেই জামায়াতের প্রার্থী তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবে বলে আশা করি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে দুই সিটিতে সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়েছে দলটি। গাজীপুরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে স্থায়ী কমিটির ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। আর খুলনায় দায়িত্ব পেয়েছেন স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এছাড়া ২০দলীয় জোটের দু’জন করে নেতাকে দুই সিটিতে সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়ে কমিটি করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার ও এলডিপির যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমকে। খুলনায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এনপিপির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ও এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসাকে।
জানা গেছে, এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে একাধিক টিম যাবে গাজীপুর ও খুলনায়। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারাও বিভিন্ন সময় টিম করে খুলনা ও গাজীপুরে নির্বাচনী প্রচারাভিযান চালাবেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৫ মে একই দিনে এই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৮
এমএইচ/এসএইচ