এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে সরকার প্রার্থী, ভোটার ও ভোট ছাড়া নিজেরাই নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করে জোর করে রাষ্ট্র চালাতে লজ্জা বোধ করে না তাদের কাছ থেকে পক্ষপাতমূলক বক্তব্য ও আচরণ ছাড়া আর কী আশা করা যেতে পারে?
শুক্রবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ সরকার এখন বিএনপি ‘ফোবিয়া’য় ভুগছে।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেশের ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। সতীর্থদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে গড়ে ওঠা যুগান্তকারী এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও গাড়ির কাগজপত্র চেক করার মতো গঠনমূলক। উপযুক্ত কাগজপত্র না থাকায় মন্ত্রী, বিচারপতি, পুলিশ কর্মকর্তা, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষের প্রতি শিক্ষার্থীদের সমআচরণ ছিল দৃষ্টান্তমূলক ও শিক্ষণীয়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংঠগন এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীগণ ও পুলিশ কর্মকর্তা পর্যন্ত এই শিশু কিশোরদের ৯ দফা দাবি ও আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। আমরাও বিএনপির পক্ষ থেকে এবং ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে তাদের ন্যায্য ও জরুরি এসব দাবি দাওয়ার প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন ঘোষণা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জনগণের জানমাল রক্ষায় ক্রমাগত ব্যর্থ ও অযোগ্য সরকার প্রথম দিন থেকেই এই আন্দোলনে ষড়যন্ত্র ও উস্কানি আবিষ্কারের অপচেষ্টা চালাতে শুরু করে।
সরকারি দলের সিদ্ধান্তেই ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের ছত্রছায়ায় হেলমেট ও মুখোস পরে অগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি, কিরিচ, রামদা নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর অমানবিক ও বর্বোরোচিত হামলা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন যে, এসব আক্রমণ নাকি বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা করেছে। কোনো পাগলও নেই যে, তারা বিশ্বাস করবে পুলিশের সহায়তায় তাদের সামনে বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি-সোঁটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মারপিট করবে, দায়িত্বরত সাংবাদিকদের কোপাবে, ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ অফিস আক্রমণ করবে।
হেলমেট পড়া ও মুখোশধারী আক্রমণকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মী ছিল এটা আহত সব সাংবাদিক এবং শিক্ষার্থীরা বলার পরেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাদের বিচার করার জন্য নাম চান। এমন বাজে রসিকতায় তিনি আনন্দ পেতে পারেন কিন্তু দেশবাসী লজ্জিত হয় বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
পত্রিকায় আক্রমণকারীদের অনেকেরই ছবি ছাপা হয়েছে, কোনো কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণকারীদের ছবির ছড়াছড়ি থাকার পরেও অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য ওবায়দুল কাদের কেন ছবি ও নাম চান, প্রশ্ন বিএনপি মহাসচিবের।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮
এমএইচ/এমজেএফ