তিনি জানিয়েছেন, উচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই মেডিকেল বোর্ড শনি ও রোববার (৬ ও ৭ অক্টোবর) পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে তার।
খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে শনিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করার পর সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন ব্রি. জে. হারুন।
হাসপাতালের পরিচালক বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে তাকে কেবিন ব্লকের ৬ তলায় ভিভিআইপি কেবিনে রাখা হয়েছে। সেখানে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া) সঙ্গেও কথা বলেছেন। এখন তিনি ভালো আছেন।
মেডিকেল বোর্ডের ওপর তার (খালেদা জিয়া) অভিযোগ থাকলে সেখানে পরিবর্তন আসবে জানিয়ে ব্রি. জে হারুন বলেন, তিনি হাসপাতালে আসার পর মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসকের ওপর তার অভিযোগ থাকলে পরিবর্তন করা হবে। কারণ উচ্চ আদালত বিএনপি চেয়ারপারসনের পছন্দ অনুসারে মেডিকেল বোর্ড গঠন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এসময় তিনি মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। বিএসএমএমইউর মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল জলিল চৌধুরী নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুনেসা আহমেদ, রিউমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, অর্থোপেডিক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নকুল কুমার দত্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে উল্লেখ করে ব্রি. জে. হারুন বলেন, প্রশাসন ও কারা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আমরা হাসপাতালে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড পেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দি রয়েছেন খালেদা। এর মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাসহ আরও বেশ ক’টি মামলায় তার বিচারকার্য চলছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ দাবি করে বারবার বিএনপির পক্ষ থেকে তার বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা দাবি করা হচ্ছে।
খালেদার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি বিশেষ বোর্ড গঠন করার নির্দেশনাসহ তার চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর একটি রিট করা হয়।
এরমধ্যে আবার গত ১৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে।
পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর সে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। যেখানে স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার মত দেয় মেডিকেল বোর্ড। তবে যে হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে সে হাসপাতালের কথা সুপারিশ করা হয়। সে বিবেচনায় বিএসএমএমইউ হাসপাতালের কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
এদিকে ওই রিট আবেদনের পর ৪ অক্টোবর দুপুরে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ খালেদাকে বিএসএমএমইউতে দ্রুত চিকিৎসা এবং ভর্তির জন্য ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠনে নির্দেশনা দেন। সেদিন রাতেই এ আদেশের কপি কারাগারে ও বিএসএমএমইউতে পৌঁছায়। এরপর উভয় কর্তৃপক্ষই খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তির প্রস্তুতি শুরু করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৮
এমএএম/ইইউডি/এইচএ/
** চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউতে খালেদা