বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
কর্নেল অলি বলেন, নির্বাচন হবে কি না, আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব কিনা সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে সরকারের ওপর।
তিনি বলেন, ঘটনার পর বিএনপি কার্যালয় যখন জনশূন্য তখন একদল হেটমেটধারী লোক গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এই হেলমেট বাহিনী নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী কিশোর ছাত্র-ছাত্রীদের ওপরও হামলা চালিয়েছিল। তখন কর্তব্যরত সাংবাদিকদের অত্যাচার করেছিল। গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া যার ছবি পাওয়া গেছে সে ছেলেটি ছাত্রলীগের কর্মী বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন।
অলি আহমদ বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে ক্ষমতাসীন দল চার হাজারেরও বেশি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে। কেউ কেউ হাতি নিয়ে ঢাক-ঢোল বাজিয়ে মিছিল সহকারে এসেছে। নির্বাচন কমিশন তখন কোনো নির্দেশনা বা কোনো আদেশ জারি করেনি। প্রশাসন ও পুলিশ কোনো বাধা দেয়নি, কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। অন্যদিকে বিএনপির জনসমাগম দেখে তারা শঙ্কিত। হয়তো এবার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না, গদি ছাড়তে হবে- এই ভয়ে তারা নিরাপরাধ নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হলো। এর দুদিন আগে লাখ লাখ নেতাকর্মী শান্তিপূর্ণভাবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে এমন কি হলো যে, গতকাল হামলা চালাতে হলো। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময় সমর্থকদের সংঘর্ষে দুজন মারা গেছে। তাতে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি বলেন, সরকার লেভেল প্লেইংফিল্ডের কথা। কিন্তু মাঠে ময়দানে যখন আমরা যাই তখন দেখি মন্ত্রীরা এখনও পুলিশ পাহাড়ায় চলেন। কয়েক দিন আগে এরশাদ রংপুরে গিয়েছিলেন, সেখানে তাকে পুলিশের এসপি নিরাপত্তা দিয়েছেন। তাহলে বিএনপি ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদেরও পুলিশের নিরাপত্তা দিতে হবে। অন্যথায় এজন্য নির্বাচন কমিশনকে এক সময় জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে।
অলি আহমদ আরো বলেন, জাতীয় রাজনৈতিক দল ও জোটের সাথে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন যে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর কোন রাজনৈতিক মামলা দেওয়া যাবে না, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হবে না এবং গায়েবি ও মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তিনি একথা বলার পরেও শত শত রাজনৈতিক ও গায়েবি মামলা হয়েছে। হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে আসামি করে ঘর-বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে
এমন অবস্থা চলতে থাকলে নিরপেক্ষ নির্বাচন অসম্ভব এবং সেক্ষেত্রে বলতে চাই ২০ দল নির্বাচনে আসুক সরকার সেটা চায় কি না তাতে সন্দেহ আছে, যোগ করেন কর্নেল অলি। তিনি বলেন, আমরা মাঠ ছেড়ে দেব এটা যদি কেউ মনে করেন তাহলে ভুল করবেন। মুক্তিযোদ্ধারা কখনও মাঠ ছেড়ে দেয় না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মাওলানা আব্দুর রকিব, মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচ এম কামরুজ্জামান, জাগপা সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সভাপতি লিটা রহমান, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, জমিয়তের উলামায়ে ইসলামের একাংশের সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস, অপর অংশের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাশেমী, ন্যাপ ভাসানীর সভাপতি অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, সাম্যবাদী দলের সেক্রেটারি কমরেড সাঈদ আহমেদ, বাংলাদেশ ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএন শাওন সাদেকী, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, বিজেপির মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদ, জাতীয় দলের সভাপতি অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, ডেমোক্রেটি লীগের মহাসচিব সাইফুদ্দিন মনি, এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আমিনুর রহমান, পিপলস লীগের মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুব হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৮
এমএইচ/এমজেএফ