ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করবেন না: ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করবেন না: ফখরুল বিজয় র‌্যালিতে বিএনপি নেতারা। ছবি: ডিএইচ বাদল/বাংলানিউজ

ঢাকা: আসন্ন নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশর মানুষ স্বৈরতন্ত্রে থাকবে না কি গণতন্ত্রে ফিরবে। মানুষ স্বাধীনতার ফল ভোগ করতে পারবে কি, পারবে না। তাই এই নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন করবেন না। 

রোববার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত বিজয় র‌্যালির আগে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচনেই মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থার মধ্যে যাবে, না-কি বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের দিকে যাবে।

এই নির্বাচনে সিদ্ধান্ত হবে আমাদের গণতন্ত্রের নেত্রী, আপোসহীন নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে এই অন্যায় অত্যাচার থেকে মুক্ত করতে পারবো কি পারবো না।  

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করবেন না। অবিলম্বে হামলা-মামলা গ্রেফতার বন্ধ করুন, অন্যথায় সব দায় দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে।  

‘আজ বিজয়ের দিনে আমাদের আনন্দিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু আমরা আজকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত, আজকে আমরা আতঙ্কিত ও উৎকণ্ঠিত। এই দেশে গণতন্ত্র টিকে থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে। ’

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ নির্বাচন কমিশন যে নির্বাচন ঘোষণা দিয়েছে সে নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে পরিচালনা করতে তারা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার এই নির্বাচনে সব রকমের পক্ষপাতিত্ব শুরু করেছে।  আমরা কখনও এই ধরনের নির্বাচন দেখিনি, সরকার নজিরবিহীনভাবে বিরোধীদলের নেতাকর্মী এমনকি প্রার্থীদেরও গ্রেফতার করছে। মিথ্যা মামলা দিচ্ছে এবং নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, গতকাল (শনিবার) মির্জা আব্বাসের ওপরে হামলা হয়েছে। ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে গুলি করা হয়েছে। সুব্রত চৌধুরীর ওপর হামলা হয়েছে। তাকে প্রচারণা করতে দেয়নি। গতকাল নবী উল্লাহ নবীর এলাকায় একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।  প্রতিদিন প্রার্থীদের ওপর হামলা হচ্ছে, অথচ নির্বাচন কমিশন নির্বাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, কিছুই করে না।   

বিজয় দিবসের র‌্যালিকেও বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিদিন গ্রেফতার চলছে। আমি সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এই গ্রেফতার বন্ধ করুন, অন্যথায় এর দায়-দায়িত্ব সবকিছু আপনাদের নিতে হবে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার দায়িত্ব নিতে হবে।

র‌্যালিতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি কম হওয়ার জন্য পুলিশকে দায়ি করে ঐক্যফ্রন্টের এই মুখপাত্র বলেন, আজকে এই র‌্যালি বেলা ২টায় হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ বলেছে ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে শেষ করতে হবে। তারপরও যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আজ বিজয়ের দিন। আর আমরা একটা লড়াইয়ের মধ্যে আছি। এ লড়াই হলো ভোটের লড়াই।  ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এই দেশে ভোটের নামে একটি প্রহসন হয়েছে।  দেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত করেছি, এবার ওয়াকওভার দেবো না। আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রার্থী দিয়েছি। তখন সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সরকার একের পর এক নির্যাতন করছে।  

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, সরকার আমাদের ওপর নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ বাহিনীকে দলীয়ভাবে ব্যবহার করে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে যাতে আমরা নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে দেই। জনগণ ৩০ ডিসেম্বর ধানের শীষের পক্ষে রায় দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে।  

পরে নয়াপল্টন থেকে বিজয় র‌্যালি শুরু হয়। যা মালিবাগ গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মহিলা দলের সভাপতি ও ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস, ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-৪ আসনের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ,  নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, জাসাস সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক হেলাল খানসহ ছাত্রদল, যুবদল, শ্রমিকদল, জাসাসসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৮
এমএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।