ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

বিশ্বাসঘাতকদের আইনের আওতায় আনা হবে: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৯
বিশ্বাসঘাতকদের আইনের আওতায় আনা হবে: ফখরুল

ফেনী: সাম্প্রতিক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ষড়যন্ত্র হয়েছে উল্লেখ করে এতে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ১৯৭১ সালে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। কখনো ভাবিনি আমাদের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় যাদের বেতন চলে, তারা বেআইনি কাজ করবে।

যারা প্রশাসনে র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীতে কাজ করেন, তারা একটি অন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কেন অন্যায়-বেআইনি কাজগুলো করবেন? এটা রাষ্ট্র ও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। তাদের ভবিষ্যতে আইনের আওতায় আনা হবে। রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার যে পরিকল্পনা তারা করেছিলেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে নির্বাচন ছেলে খেলা নয়, আর প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ।  

শনিবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ফেনীর দাগনভূঞায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর বাড়িতে ‘ফেনী-৩ আসনের সর্বস্তরের জনগণ’ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ফখরুল এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা একটি দলকে ক্ষমতায় আনার জন্য যুদ্ধ করিনি। এদেশের মানুষ সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। পৃথিবীর কোনো দেশে স্বৈরাচার টেকেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আপনি বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বড় নেতা নন। একদলীয় সরকার গঠন করার কারণে তিনিও টিকতে পারেননি। এখনো সময় আছে, নির্বাচন বাতিল করে দিন। আমাদের দাবি শুধু বিএনপিকে ক্ষমতায় আনা নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা।  

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে বাঙালি ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো, ৩০ ডিসেম্বর দেশের সরকার প্রশাসনকে নিয়ে একই কায়দায় জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, এটি কোনো নির্বাচন ছিলো না, এটি ছিলো একদলীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা। গণঐক্যের ডাকে মানুষের সাড়া দেখে তারা ভয় পেলো, নির্বাচনে জনগণ যেন ভোট দিতে না পারে তার সমস্ত ব্যবস্থা করে রেখেছিলো সরকার।  

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ যদি এতো জনপ্রিয় হয়, এতো উন্নয়ন করে তাহলে কেন বিরোধীপক্ষকে কারাগারে রেখে নির্বাচন করতে হবে। সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর কোনো গ্রেফতার করবেন না, কিন্তু তিনি সেই প্রতিশ্রুতি রাখেননি। নির্বাচনের আগের দিনও গ্রেফতার হয়েছেন আমাদের নেতাকর্মীরা। ২০১০ সাল থেকে বিএনপির বিরুদ্ধে ৯৮ হাজার মামলা দায়ের হয়েছে এবং ২৫ লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করেছে।

মতবিনিময় সভায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার পারুল আক্তার নামে এক নারীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে, এর মাধ্যমে দেশের ১৮ কোটি মানুষের উপর নির্যাতন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আপনি একজন নারী, আপনার দলের নেতাকর্মীরা একজন নারীর ওপর যে পাশবিক নির্যাতন করেছে, তার জন্য আপনাকে দেশ ও জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।  

জনগণের উদ্দেশে আ স ম রব বলেন, বাংলাদেশ এক মহাদুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। খুনি-জানোয়ার থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, ফেনী জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক জিয়া উদ্দিন মিস্টার, দাগনভূঞা উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ফেনী-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী আকবর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক চুট্টু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৯
এসএইচডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।