শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল এই মনোভাব প্রকাশ করেন।
সংসদের বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত দলীয় সদস্য জিএম সিরাজকে নিয়ে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে যান ফখরুল।
এসময় এলডিপি সভাপতির নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা মুক্তি মঞ্চের বিষয়ে ফখরুল বলেন, একটা রাজনৈতিক দলের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আছে যে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করার। গণতন্ত্রের জন্য ও ‘দেশনেত্রী’ খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে কোনো উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেন অলি আহমদ। ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’-এ এলডিপি ছাড়াও আছে ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, খেলাফত মজলিস এবং ন্যাশনাল ওলামা মুভমেন্ট।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে বরগুনার মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে, প্রতিদিন খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে। বরগুনায় রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা প্রমাণ করে এই সরকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণের কারণে, বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয়করণের কারণেই এসব ঘটনা ঘটছে। অপরাধী যদি শাস্তি না পায় এবং দলীয় কারণে তারা যদি মুক্ত হয়ে যায়, স্বাভাবিক কারণে অন্য অপরাধী সেই দলের ছত্রছায়ায় যায় এবং এতে অপরাধ করার প্রবণতা আরও বেড়ে যায়- সেখানেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে।
ফখরুল বলেন, যেহেতু দেশে আইনের শাসন নেই, যেহেতু জবাবদিহিতামূলক কোনো সরকার নেই, যেহেতু জনগণ এই সরকারকে নির্বাচিত করেনি, পার্লামেন্ট কোনো জনগণের প্রতিনিধি নেই, সেই কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি, গত এক দশক ধরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধু নয়, বিচার বিভাগকেও দলীয়করণ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হবে, হত্যা বাড়বে, ধর্ষণ বাড়বে- এটাই কিন্তু সোশ্যাল কন্ডিশন।
‘বিএনপিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের পক্ষে খেলেছেন’ বলে সম্প্রতি জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ নাসিমের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, এসব পলিটিক্যাল রেটোরিকস (রাজনৈতিক বক্তব্য)। এগুলোর উত্তর আমার কাছে পাবেন না।
বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ বলেন, আপনারা জানেন যে, বগুড়া-৬ আসনে উপ-নির্বাচনে মানুষ এবার ভোট দিয়েছে। ভোটটি উসবমুখর বলবো না। মানুষ ধিক্কার নিয়ে ভোট দিয়েছে। আপনারা জানেন গত ১০ বছরে এই সরকার ভোটের সংস্কৃতি নষ্ট করে দিয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পারছে না। এই সরকার ভোটের সরকার নয়, রাতের ভোট দিনে হয়, দিনের ভোট রাতে হয়। যাই হোক মানুষের এই অনাগ্রহ ও মানুষের অনিচ্ছার মধ্যে এই ভোট হয়েছে। তারপরও বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বগুড়ার জনগণ সেই আসনে যে আসন খালেদা জিয়ার আসন, যে আসন জিয়া পরিবারের আসন, এই আসনটি যেন বেহাত না হয়, এই আসনটি যেন জিয়া পরিবারের কাছে থাকে সেজন্য বগুড়ার মানুষ ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করেছে।
ভোটের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হলে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন বলেও জানান জি এম সিরাজ।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, মাহবুবুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, ওবায়দুর রহমান চন্দন, শায়রুল কবির খান, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেনসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/