ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

সারাদেশ মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে: বিএনপি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
সারাদেশ মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে: বিএনপি

ঢাকা: করোনা মহামারিতে সারাদেশ মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারি হিসেবে ইতোমধ্যে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। এ পর্যন্ত (২৩ জুন) মারা গেছেন ১ হাজার ৫৪৫ জন। গত ২ সপ্তাহ যাবত প্রতিদিনই গড়ে মারা যাচ্ছেন ৪১ জন। অথচ ১ম দেড় মাসে প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১০ জনের নিচে। সরকারের যথাযথ পরিকল্পনা না থাকায় দিন দিন বাড়ছে লাশের সারি। একইভাবে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও।

বৃহস্পতিবার (২৫জুন) দুপুরে বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষণ কমিটি আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উত্তরার নিজ বাসা থেকে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় প্রতিদিনই শনাক্ত হচ্ছেন সাড়ে ৩ হাজারের মতো মানুষ।

যদিও একদিনে পরীক্ষা করা হচ্ছে মাত্র ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার নমুনা। যদি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ত তবে কোথায় গিয়ে দাঁড়াত আক্রান্তের সংখ্যা, সেটি সহজেই অনুমান করা যায়। ২৩ জুন পর্যন্ত  ৪ মাস হতে চললেও ১৮ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে সারাদেশে মাত্র ৬ লাখ ৬৭ হাজার ১১টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। আর এই নমুনায় শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জন। শনাক্তের প্রথম দিকে মৃত্যুর হার অনেক কম থাকলেও এখন বাড়ছে লাগামহীনভাবে। শনাক্তের ৭৯তম দিনে প্রথম ৫০০ জন মৃত্যু ছাড়ালেও পরবর্তী ১৬ দিনের ব্যবধানে দ্বিতীয়বারের মতো ৫০০ ছাড়ায় আর সর্বশেষ মাত্র ১২ দিনে মৃত্যু ছাড়ায় ৫০০ জনে। পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী ২১৫টি দেশের মধ্যে জনসংখ্যার অনুপাতে নমুনা পরীক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭তম।

তিনি বলেন, করোনার প্রকৃত তথ্যও গুম করছে গুম-খুনের এই সরকার। জনমনে ধারণা গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে যে মৃত ও আক্রান্তের সঠিক চিত্র লুকিয়ে রাখছে ক্ষমতাসীনরা।

সরকার তাদের বিভিন্ন গোঁজামিলের তথ্য গোপন করতে নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৮ মার্চ রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পক্ষ থেকে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের খবর দেওয়া হয়। এরপর কয়েকদিন সংবাদ সম্মেলন করা হলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নে জর্জরিত হয়ে পরে তা সংবাদ বুলেটিনে রূপ নেয়। এখন শুধু করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুসহ কিছু তথ্য দেওয়া হয়, কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো সুযোগ নেই। এতেও স্পষ্ট, সরকার মনগড়া তথ্য প্রকাশ করেই শুধু পার পেতে চাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সরকারি হিসাবের সঙ্গে আক্রান্ত ও মৃত্যুর আকাশ-পাতাল তফাৎ। ঢাকা শহরের কিছু কবর স্থানে লাশ দাফনের চিত্র এই বছরের চিত্র ও বিগত বছরের চিত্র তুলনা করলেই বুঝতে পারবেন।  

রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে ২০১৯ সালের মে মাসে ৭৭৭টি। আর এ বছর মে মাসে দাফন করা হয়েছে ১০৩৪টি। আর চলতি জুনের প্রথম ১৫ দিনে লাশ দাফন করা হয়েছে ৫১৫টি। এর অধিকাংশ করোনা আক্রান্ত রোগীদের লাশ। রাজধানীর পোস্তগোলা শশ্মানে ২০১৯ সালে ৭৬টি। চলতি বছরের জুন মাসের শুধু প্রথম ১৫ দিনে লাশ সৎকার করা হয়েছে ৮৫টি।

জুরাইন কবরস্থানে চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন মাসের প্রথম ১৫ দিনে ১ হাজার ২০২টি লাশ দাফন করা হয়েছে। অন্য দিকে ২০১৯ সালের এই সময়ে ৮৪৯টি লাশ দাফন করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
এমএইচ/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।