ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

বাজেট

নবীন বাংলাদেশের জন্য প্রবীণ বাজেট: সিপিডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৩ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৮
নবীন বাংলাদেশের জন্য প্রবীণ বাজেট: সিপিডি সিপিডির বাজেট পর্যালোচনা বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন, ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটকে ‘নবীন বাংলাদেশের জন্য প্রবীণ বাজেট’ বলে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শুক্রবার (০৮ জুন) রাজধানীর গুলশানে লেকশোর হোটেলে সিপিডি আয়োজিত বাজেট পর্যালোচনা বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ই-কমার্সে তরুণদের সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে।

তাদের ওপর করের বোঝা চাপানোয় বিকশমান কর্মসংস্থানে ধাক্কা লাগতে পারে।

বাজেটে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে, বিত্তবানদের ক্ষেত্রে কর কমানো হচ্ছে উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাজেটে মধ্যবিত্ত ও বিকাশমান মধ্যবিত্তর ওপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে। এছাড়া উবার পাঠাওয়ের ক্ষেত্রেও করারোপ করা হয়েছে। যা ভোক্তাদের ঘাড়ে পড়বে।

তিনি বলেন, সিপিডিসহ সবারই দাবি ছিলো ব্যক্তিখাতে করের সীমা ৩ লাখ টাকা করার। কিন্তু তা না করে উল্টো মধ্যবিত্তর ওপর করের বোঝা চাপানো হয়েছে। তার একটি প্রমাণ হচ্ছে, আবাসন খাতে প্লট রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ঢালাওভাবে দুই শতাংশ হারে মূসক কমানো হয়েছে। আগে এক হাজার ১শ’ বর্গফুটের ছোট ফ্ল্যাটের দামের ওপর দেড়ভাগ হারে কর দিতে হতো। আর এক হাজার ৬শ’ বর্গফুটের জন্য দিতে হতো আড়াই শতাংশ। কিন্তু এখন ঢালাওভাবে গড়ে দুই শতাংশ করা হয়েছে। ফলে মধ্যবিত্ত ও বিকাশমান মধ্যবিত্তর ওপর করের চাপ বাড়বে।

বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাখাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে:সিপিডি

নির্বাচনী বাজেট কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক অর্থনীতির বাজেট। কারণ বাজেট অর্থায়নে যারা সহযোগিতা করবে তাদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এটি নবীন বাংলাদেশের জন্য প্রবীণ বাজেট। ’

বাজেটে ব্যাংকখাতের করপোরেট ট্যাক্স আড়াই শতাংশ কমানোর কঠোর সমালোচনা করে দেবপ্রিয় বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সব ব্যাংকের কর ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এদের কর কমানোর যৌক্তি কোনো কারণ দেখি না। প্রশাসনিক কারণও দেখি না। কারণ হলো এটার ফলে ব্যাংকখাতের সুদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। বরং এ মুনাফাটা পাবেন ব্যাংক মালিকরা। ব্যাংকখাতে লুটপাট ঠিক না করে কর কমানো উচিত হয়নি। এতে মালিকপক্ষ এককভাবে লাভবান হবেন। ঋণ গ্রহিতা এবং আমানতকারী কোনো সুবিধা পাবেন না।

বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি নিয়ে গভীর সংশ্রয় প্রকাশ করা হয় সিডিপির পক্ষ থেকে। পর‌্যালোচনায় বলা হয়, এবারের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ ধরা হয়েছে। এ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগ বর্তমান বিনিয়োগের চেয়ে ১১৭ হাজার কোটি টাকা বাড়াতে হবে, একই সঙ্গে সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে বর্তমানের চেয়ে ৩০ হাজার কোটি টাকা। পুঁজির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। এটি বাস্তবে করা অনেক কঠিন, এজন্য জিডিপির এ প্রবৃদ্ধি নিয়ে গভীর সংশয় রয়েছে। এ অর্থ বিনিয়োগই বড় চ্যালেঞ্জ।

কারণ এ মুহূর্তে দেশের অর্থনীতির জন্য ব্যক্তিখাতের স্থবির বিনিয়োগ ত্বরান্বিত করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার বাড়ানো, মানবসম্পদের গুনগত উন্নয়ন, সম্পদের বৈষম্য কমানো বড় সমস্যা। এ সব সমস্যা থেকে উত্তরণ করেই বাজেটে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের টার্গেট পূরণ করতে হবে, যা নিয়ে আমরা গভীর সংশয় প্রকাশ করছি।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ও গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খানসহ সংগঠনের কর্মকর্তারা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৮/আপডেট: ১৬৪৪ ঘণ্টা
এমএফআই/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।