ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আদালত

দুর্নীতির অভিযোগ শুনছেন খালেদা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০১৬
দুর্নীতির অভিযোগ শুনছেন খালেদা ছবি: সুমন শেখ-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ পড়ে শোনানো হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। এরপর মামলাটিতে ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিখিত বক্তব্য দাখিল করবেন তিনি।    

ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে দুর্নীতির অভিযোগ পড়ে শোনানো হচ্ছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে। এরপর মামলাটিতে ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে লিখিত বক্তব্য দাখিল করবেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুর দুইটা থেকে বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাকে সকল সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণসহ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ পড়ে শোনাচ্ছেন বিচারক।

একই সঙ্গে জিয়া ‍অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও হাজিরা দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম চলছে এ আদালতে।

এর আগে দুপুর সাড়ে বারটার দিকে আদালতে হাজির হন দুই মামলারই প্রধান আসামি খালেদা জিয়া। বেলা সাড়ে এগারটার দিকে গুলশানের বাসা থেকে রওনা হন তিনি।

খালেদা আসার আগে অরফানেজ মামলায় ৩১তম ও  শেষ সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদকে আসামিপক্ষের জেরা শেষ হয়। মামলাটির আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানের পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট বোরহানউদ্দিন তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শেষ করেন।


এরপর চ্যারিটেবল মামলায় খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এর আগে আদালতে হাজির না হয়ে বা উপস্থিত হয়েও আইনজীবীদের মাধ্যমে নানা কারণ দেখিয়ে বেশ কয়েকবার সময়ের আবেদন জানিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে নেন খালেদা। সর্বশেষ গত ২৪ নভেম্বর অনুপস্থিত খালেদার আইনজীবীদের আবেদনক্রমে চ্যারিটেবল মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ফের পিছিয়ে ০১ ডিসেম্বর পুনর্নির্ধারণ এবং তাকে অবশ্যই হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। অন্যথায় বিধি অনুসারে তার জামিন বাতিল করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন।

এ মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়া-তারেকসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য চার আসামি হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন।

জামিনে থাকা দুই মামলার আসামিরাও আদালতে উপস্থিত রয়েছেন। তারেক রহমানের পক্ষে হাজিরা দিয়েছেন তার আইনজীবী।

এদিকে খালেদা জিয়ার আদালতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দলের সিনিয়র নেতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত আছেন।

২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৬
এমআই/এএসআর

**
আদালতে খালেদা
** আদালতের পথে খালেদা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।