ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আদালত

পাস্তুরিত দুধ নিয়ে হাইকোর্টে রিট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৮
পাস্তুরিত দুধ নিয়ে হাইকোর্টে রিট প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে পাস্তরিত দুধ

ঢাকা: বিশেষজ্ঞ কমিটি করে বাজারে থাকা পাস্তুরিত তরল দুধ পরীক্ষা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

১৬ মে বাণিজ্যিকভাবে পাস্তুরিত দুধ সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়েরিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশ’র (আইসিডিডিআর,বি) একটি গবেষণা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওইসব প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ এ রিট করেন।

সোমবার (২১ মে) মো. তানভীর আহমেদ জানান, নিরাপদ পাস্তুরিত দুধের নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

খাদ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে রিটের বিবাদী করা হয়েছে।

১৬ মে ‘বাজারের ৭৫ ভাগ পাস্তুরিত দুধ সরাসরি পানের অযোগ্য’ শিরোনামে বাংলানিউজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের দুগ্ধ খামারগুলো থেকে শুরু করে দোকান পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে দুধ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত। যা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়।  

এটি বিপজ্জনক হতে পারে যদি এই দুধ ‘কাঁচা’ (ফুটানো ছাড়া) অবস্থায় পান করা হয়। উদ্বেগের বিষয় হলো, বাংলাদেশে কাঁচা দুধ পানের প্রবণতা। বাজারের এই কাঁচা দুধ সরাসরি পান করা অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে অভিমত আইসিডিডিআর,বি’র গবেষকদের।

সম্প্রতি শিশুদের পুষ্টির প্রাথমিক উৎস বাণিজ্যিকভাবে পাস্তুরিত দুধ সম্পর্কে গবেষণা করে প্রাপ্ত ফলাফল প্রতিবেদনে বলা হয়, দুগ্ধশিল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে দুধের অণুজীব বিজ্ঞানসম্মতভাবে মান যাচাই করার উদ্দেশ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধ উৎপাদক, হিমাগার এবং স্থানীয় রেস্তোরাঁ থেকে কাঁচা দুধের ৪৩৮টি নমুনা সংগ্রহ করেছিলো আইসিডিডিআর,বি। এছাড়া ঢাকা এবং বগুড়ার বিভিন্ন দোকান থেকে বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকৃত দুধের ৯৫টি নমুনাও সংগ্রহ করে তারা।  

গবেষকরা দেখেন যে প্রাথমিক দুধ উৎপাদনকারী পর্যায়ে ৭২ ভাগ নমুনা কলিফর্ম (≥১০০ সিএফইউ/এমএল) এবং ৫৭ ভাগ নমুনা ফিক্যাল কোলিফর্ম (≥১০০ সিএফইউ/এমএল) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত।  

এছাড়া নমুনাসমূহের ১১ ভাগই উচ্চমাত্রার ই. কোলাই (≥১০০ সিএফইউ/এমএল) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত। ফিক্যাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। দুধে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির ফলে বোঝা যায় যে, এই দুধ জীবাণু বা রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্বারা দূষিত। যা উষ্ণ রক্তের প্রাণীর মলে থাকতে পারে বা দোহনের সময় দুধে মিশতে পারে।

উৎপাদনকারীদের থেকে দুধ সংগ্রহের স্থানে দেখা গেছে, নমুনাসমূহ উচ্চমাত্রার কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া (≥১০০ সিএফইউ/এমএল) দ্বারা দূষিত। এবং মল দ্বারা দূষিত হওয়ার হার ছিলো ৯১ ভাগ ও ৪০ ভাগ নমুনায় উচ্চমাত্রার ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়া ছিল।  

আরও উদ্বেগের বিষয় হলো যে, পরীক্ষিত পাস্তুরিত দুধের নমুনার প্রায় ৭৭ ভাগে মোট ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা (অ্যারোবিক প্লেট কাউন্ট) উচ্চমাত্রাবিশিষ্ট। যা বিএসটিআই’র মানদণ্ডকে ছাড়িয়ে যায়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৮
ইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।