একজন অলরাউন্ডারের জন্য একটি টেস্টে সেঞ্চুরি এবং পাঁচ উইকেট—এ যেন স্বপ্নের চেয়েও বেশি কিছু। আর সেই স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনেই ম্যাচ শেষ। প্রথম ইনিংসে সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরির পর মিরাজের ১৬২ বলে ১০৪ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ তোলে ৪৪৪ রান। তাতে প্রথম ইনিংসেই এগিয়ে যায় ২১৭ রানে। এরপর স্পিন-ত্রাসে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ১১১ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
এই ইনিংসে মিরাজ বল হাতে ৩২ রানে নেন ৫ উইকেট। তাইজুল ইসলাম ৩টি এবং নাঈম হাসান ১টি উইকেট নেন। ব্যাট হাতে একমাত্র লড়েছেন ওপেনার বেন কারান—১০৩ বলে ৪৬ রান করে হার কিছুটা বিলম্বিত করেন।
তবে এই ম্যাচ শুধু জয়ের গল্প নয়, মিরাজের গৌরবময় মাইলফলকেরও গল্প। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ১৯৬৪ রান নিয়ে। সেঞ্চুরির মধ্য দিয়ে টেস্টে ২০০০ রান পূর্ণ করেন। এর আগে সিলেট টেস্টে পূর্ণ করেন ২০০ উইকেট। অর্থাৎ, মিরাজ এখন বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্রুততম ২০০০ রান ও ২০০ উইকেটের মালিক—৫৩ টেস্টে, যেখানে সাকিবের লেগেছিল ৫৪ ম্যাচ।
বিশ্ব ক্রিকেটে এই বিরল ডাবল অর্জন করেছেন মাত্র ২৬ জন ক্রিকেটার। তার মধ্যে মিরাজ টেস্ট ম্যাচ সংখ্যার বিচারে চতুর্থ, ভারতের রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে যৌথভাবে। দ্রুততার দিক থেকে তার চেয়ে এগিয়ে কেবল ইয়ান বোথাম (৪২), ইমরান খান ও কপিল দেব (৫০) এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন (৫১)।
চট্টগ্রামে ব্যাটিং বিপর্যয়ের সময় যখন বাংলাদেশের বড় লিডের স্বপ্ন ভাঙার পথে, তখন লোয়ার অর্ডারের ব্যাটারদের নিয়ে মিরাজ গড়ে তোলেন সাহসী জুটি। তার ১১ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটিই ছিল ম্যাচের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। এর আগে প্রথম ইনিংসে সাদমান ইসলামের ১২০ রানের ইনিংসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এর আগে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে ৩ উইকেটে জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। এই হারে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলাদেশ। অবশেষে চট্টগ্রাম টেস্ট জিতে সম্মান রক্ষা করল টাইগাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে ২২৭ ও ১১১/১০ (কারান ৪৬; মিরাজ ৩২/৫, তাইজুল ৪২/৩)
বাংলাদেশ ৪৪৪ (সাদমান ১২০, মিরাজ ১০৪; ভিনসেন্ট মাসাকাদজা ১১৫/৫)
ফলাফল: বাংলাদেশ ইনিংস ও ১০৬ রানে জয়ী।
সিরিজ: ১-১
এমএইচএম