ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

হিউজের আবেগময় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১৪
হিউজের আবেগময় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: হাজারো মানুষের শোকের সমাগমের মধ্যে শেষ হলো অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার ফিল হিউজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান। হিউজের নিজ শহর ম্যাকসভিলের বিদ্যালয় মাঠে বিদায় পর্বে ছিলেন বিভিন্ন স্পোর্টস তারকা, বন্ধু, সমর্থক ও স্থানীয় এলাকাবাসি।



অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক এদিন হিউজের বাবা জারজোরি ও ভাই জেসনের সঙ্গে কফিন ধরে শোক প্রকাশ করেন। এর আগে ক্লার্ক হিউজকে কেন্দ্র করে এক আবেগময় বক্তৃতা দেন। আর হিউজকে বিদায় জানানোর সময় ‘ছোটভাই’ হিসেবেও সম্মধন করেন।

হিউজের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ছিলেন শেন ওয়ার্ন, রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ম্যাথুউ হেডেন, ব্রায়ান লারা ও স্যার রিচার্ড হ্যাডলির বেশ কয়েকজন বিখ্যাত ক্রিকেটার। সেই সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান অজি ক্রিকেট দলের প্রায় সব কিক্রেটার। এছাড়া ছিলেন রাগবি গ্রেট গ্রেগ ইংলিস ও বক্সার অ্যান্থোনি মুনন্দিন। তারা সবাই নিরবে শোকাহত অবস্থায় মিছিলে যোগ দেন।

হিউজেরর এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াকে কেন্দ্রকরে পুরো শহরে জুড়ে ছিল নিরবতা। ম্যাকসভিলের বেশিরভাগ ব্যাবসায়ীরা তাদের ব্যবসা বন্ধকরে এই শোকের সঙ্গে শামিল হন।

পরে ক্লার্ক তার বক্তব্যে বলেন, ‘ হিউজের মৃত্যুর পর আমি সিডনী ক্রিকেট গ্রাউন্ডে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি মাঠের ঘাস স্পর্শ করি। তবে আমি হলপ করে বলতে পারি আমার কাছে মনে হয়েছিল হিউজ আমার পাশেই আছে। আমার কাছে আরো মনে হলো আমরা দুজন দু’পাশে ব্যাটিংয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ’

তিনি আরো বলেন, সিডনী মাঠে হিউজের খেলার কল্যানে আমার কাছে মাঠটি আরো পবিত্র মনে হচ্ছে। আর এটা পাগলামি হতে পারে তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে সে যে কোন সময় আমাকে ডাকবে। ’

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সাউথ অস্ট্রেলিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলসের মধ্যকার শেফিল্ড শিল্ড ম্যাচে মাথায় গুরুতর আঘাত পান হিউজ। এরপর তাকে সিডনি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়।

সাউথ অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ব্যাটিং করার সময় সিন অ্যাবটের একটি বাউন্স বলে মাথায় আঘাত পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন হিউজ। এর পরপরই তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত সিডনির সেন্ট ভিনসেন্টস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

দু’দিন কোমায় থেকে ২৭ নভেম্বর পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেন হিউজ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ২৫ বছর।

এক নজরে ফিল হিউজ‍:

১৯৮৮ সালের ৩০ নভেম্বর হিউজ অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে জন্ম গ্রহণ করেন। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান ডানহাতি অফব্রেক বোলিংও করতেন। টপ অর্ডারে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি হিউজ গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছনেও দাঁড়াতেন।

নিউ সাউথ ওয়েলস, মিডলসেক্স, হ্যাম্পশায়ার, সিডনি থান্ডার, ওরচেস্টারশায়ার, দ. অস্ট্রেলিয়া, অ্যাডিলেড স্ট্রাইকারস আর মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে খেলেছেন হিউজ।

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে জোহানেসবার্গে দ. আফ্রিকার বিপক্ষে তার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়। ২৬ টেস্টে তিনি ৭টি অর্ধশতক আর ৩টি শতক হাঁকিয়েছেন। ৩২.৬৫ গড়ে টেস্টে সংগ্রহ করেছেন ১৫৩৫ রান। ইনিংস সর্বোচ্চ টেস্ট রান ১৬০। টেস্টে ১৯৯টি চারের পাশাপাশি হিউজ ১১টি ছক্কা হাঁকান।

১১ জানুয়ারি ২০১৩ সালে মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার একদিনের ম্যাচে অভিষেক হয়। ২৫টি একদিনের ম্যাচে তার সংগ্রহ ৮২৬ রান। ইনিংস সর্বোচ্চ অপরাজিত ১৩৮ রান করেছিলেন তিনি। ওয়ানডেতে তার দুটি সেঞ্চুরি আর চারটি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। গত অক্টোবরে আবু ধাবিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ান ডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।