ঢাকা: ফেসবুকে তুলোধুনো হচ্ছেন রমিজ রাজা। সামাজিক যোগাযোগের আর সব মাধ্যমেও তাকে উদ্দেশ্য করে গালির তুবড়ি ছোটাচ্ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
তাকে দেওয়া বিশেষ বিশেষণগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘কানঢাকা’, ‘ছেঁচড়া’, ‘কানকাটা’, ‘বেতমিজ’, ‘বড় রাজাকার’, ‘অশিক্ষিত’, ‘গাধার বাচ্চা’ ইত্যাদি শব্দমালা।
কার্যত চলমান ক্রিকেট বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ চলাকালে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের প্রতি মানহানিকর ও পক্ষপাতদুষ্ট বক্তব্য এবং অহেতুক বাংলাদেশ বিদ্বেষই তাকে নির্ভেজাল ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এমন অচ্ছুতজনে পরিণত করেছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় ম্যানুকা ওভাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার ক্রিকেট ম্যাচে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার সুনীল গাভাস্কার, সৌরভ গাঙ্গুলী ও হারশা ভোগলে এবং অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেইডেনের সঙ্গে পালা করে ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন পাকিস্তানের ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা।
ধারাভাষ্যে অন্যরা বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রশংসায় ভাসালেও রমিজ রাজার কথাবার্তা ছিল রীতিমতো পক্ষপাতদুষ্ট। খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, এমনকি পুরস্কার বিতরণীতেও তিনি তার বাংলাদেশবিরোধী মনোভাব গোপন করেননি।
এ নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবেই অনেক ক্রিকেটপ্রেমী বাংলানিউজে ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলানিউজে ‘বাংলাদেশের শত্রু কানঢাকা রমিজ, বন্ধু সৌরভ’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পায়, সেটি লেখেন অতিথি লেখক ড. শাখাওয়াৎ নয়ন।
ওই লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর রমিজের হীন-মানসিক আচরণের বিষয়টি প্রায় সবার নজরে আসে। এরপর অনেকেই বাংলানিউজে ফোন করে রমিজের মুখোশ উন্মোচনের জন্য ধন্যবাদ জানাতে থাকেন।
যারা ফোন করতে পারেননি তারা ‘বাংলাদেশের শত্রু কানঢাকা রমিজ, বন্ধু সৌরভ’ শীর্ষক লেখার নিচেই মন্তব্য করেন। আবার ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বাংলানিউজের ফেসবুক পেজেও রমিজের উন্নাসিক আচরণ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তারা এমন আচরণের জন্য পাকিস্তানের তৃতীয় সারির এ সাবেক ক্রিকেটারকে ধারাভাষ্যকার প্যানেল থেকেই বাদ দেওয়ার জন্য আইসিসির সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামালের কাছে দাবি জানান। একইসঙ্গে তিনি যেন আর কখনো বাংলাদেশে আসতে না পারেন (ক্রিকেট ধারাভাষ্য দিতে) এবং বাংলাদেশের খেলা চলাকালে ধারাভাষ্য না দিতে পারেন সেজন্য কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ দাবি করেন।
রবিউল ইসলাম পুলক নামে বাংলানিউজের এক পাঠক ‘বাংলাদেশের শত্রু কানঢাকা রমিজ, বন্ধু সৌরভ’ শীর্ষক লেখাটির মন্তব্যে বলেন, তাদের যত জ্বালা ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর। এটা তারা ভোলে কীভাবে! ওই ‘ওয়াশ’ শত বিশ্বকাপ দিয়েও তো মেটানো যাবে না!!
পুলকের মতোই প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেন সামিয়া অরিন, আনওয়ার হাসানসহ অনেকে।
চন্দ্র বিন্দু ছদ্মনামের আরেক পাঠক বলেন, ভালো লিখেছেন। রমিজ রাজা আসলেই ইতরামির চূড়ান্ত করেছে। মুশফিক ব্যাট করার সময় তার সাইজ (আকৃতি) নিয়ে হইচই করেছে।
সুমন বিডিজে, আল আমিন, সায়ীদ, কামাল ও দিদারের মতো বাংলানিউজের অনেক পাঠক বলেন, ...জাদা রমিজ রাজারে ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে বহিষ্কার করতে আইসিসির সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামালের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এমনকি তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোরও দাবি জানান মহাদেব, আরশাদ আলীসহ বেশ কিছু পাঠক।
গোলাম কিবরিয়া খান নামে আরেক পাঠক বলেন, ‘অই ..র পো আর যেন বাংলাদেশের খেলার সময় না থাকে, আইসিসিকে এ ব্যাপারে কঠোরভাবে বলা উচিৎ।
খানের এই দাবির সঙ্গে গলা মিলিয়েই মন্তব্য করেন অর্বাচীন, সুব্রত পালসহ আরও কিছু পাঠক।
পাঠক আরিফ ও অমিত বলেন, আসলে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তান হারায় (ভারতের সঙ্গে) রমিজ রাজার মাথা ঠিক নেই। আর যাদের নিজের সম্মান নেই, তারা আর অন্যকে সম্মান দেবে কীভাবে?
ওদের রক্ত কোনো দিন পরিশুদ্ধ হবে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মইন উদ্দিন, আমিন সরকারসহ কিছু পাঠক।
নাদিয়া আক্তার রবি নামে আরেক নারী পাঠক অবশ্য রমিজ রাজার প্রতি সরাসরি ঘৃণার কথাই জানিয়ে দেন।
পাঠক হোসেন আলী রমিজ রাজাকে ‘হাইওয়ান’ (জানোয়ার) মন্তব্য করে বলেন, তোরে যেন বাংলা দেশের কোনো খেলায় বল কুড়ানিতেও না দেখি।
অবশ্য, ‘কুকুরের কাজ কুকুর করেছে’ মন্তব্য করে এ নিয়ে মাথা না ঘামাতে টাইগারভক্তসহ ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রতি আহ্বান জানান পাঠক হারুনুরু রশিদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫