ঢাকা, রবিবার, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

ক্রিকেট

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন ওদের

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪৩, ডিসেম্বর ৪, ২০১৫
আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন ওদের ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: অনুশীলনে কোচ আসেননি। তাতেও থেমে নেই ওরা।

আলস্য যেন ‘মহাপাপ’ ওদের কাছে। কোচ হাসানুল সাজেদিন শাওন তরুণ শিষ্যদের বাতলে দিয়েছেন, ‘অনুশীলনে ফাঁকি মানে নিজেকেই ফাঁকি দেওয়া। তুমি যতটু‍কু অনুশীলন করে এগুবে তোমার ভবিষ্যত ততটুকুই এগিয়ে যাবে। ’

কোচের শত দিক-নির্দেশনার মাঝে এই কথাটাই বার ‍বার কানে বাজে ওদের। গোল্ডেন বয়েজ ক্রিকেট একাডেমির ক্রিকেটারদের কোচিং করানোর দায়িত্ব নিয়েছেন ওই একাডেমিরই খেলোয়াড় মোজাম্মেল হোসেন। মিরপুরের গোলারটেক ঈদগাহ মাঠে হাল্কা ওয়ার্মআপের পর নেটে কংক্রিটের উইকেটে ব্যাট-বলের অনুশীলন চললো পাক্কা দুই ঘণ্টা।

শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও সাকিব-মুস্তাফিজ-মুশফিকদের অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে বড় ক্রিকেটার হওয়ার মানসে এগিয়ে যাচ্ছে একাডেমির ক্রিকেটাররা। আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন ওদের চোখে-মুখে। ‌ঈদগাহ মাঠের ক্রিকেটীয় অবকাঠামো বলতে কংক্রিটের তিনটি উইকেট। যার একটিতে আছে নেট প্র্যাকটিসের সুবিধা।

মাঠের কোথাও ঘাস না থাকায় ফিল্ডিং অনুশীলন করা বেশ কষ্টসাধ্য এখানে। তবে এমন এবড়ো-থেবড়ো মাঠ পেয়েও খুশি ওরা। ভালো ক্রিকেটার হওয়ার জন্য এই সুযোগ পর্যাপ্ত কিনা- এই প্রশ্নের উত্তর একটু ঘুরিয়ে দিলেন ইতিবাচক মানসিকতার তরুণ মোজাম্মেল, ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এটা মেনে নিতে হবে। সরকারের পক্ষে তো সম্ভব না কোনো একটা একাডেমির জন্য একটা মাঠ দিয়ে দেওয়া। আজকের মুস্তাফিজ-সাকিবরাও কোনো না কোনো সময় ক্রিকেট একাডেমিতে ছিলেন। সেখানে হয়তো তারা এর চেয়ে কম সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। তারা তো বড় ক্রিকেটার হয়েছেন। পেছনের ওই সময়ের চেয়ে এখন নিশ্চয়ই সবকিছু উন্নত হয়েছে। আমরা খুশি এখানে অনুশীলন করতে পেরে। ’

এটুকু সুযোগে সন্তুষ্ট থাকলেও এ মাঠের কিছু  সংস্কারের দাবি ক্রিকেটারদের। তাদেরই একজন সাইফুল হোসেন বললেন, ‘ঢাকা শহরের মধ্যে আমি বলবো ক্রিকেটের জন্য এটা সেরা মাঠ। সরকার যদি আরেকটু নজর দিতো! মাঠটা বালুর, তাই যদি ঘাস লাগিয়ে সবুজায়ন করা হতো। মাঠে ঘাস নাই এটা সবচেয়ে বড় সমস্যা। এখানে ড্রাইভ দিতে সমস্যা হয়। সবার তো নেশা থাকে ক্রিকেট খেলার উপর। দেখা যায়, একটা বল ধরতে ড্রাইভ দিয়ে ইনজুরড হতে হচ্ছে। ’

একাডেমিতে ৫০০ টাকা মাসিক ফি দিয়ে খেলছেন এসব ক্রিকেটাররা। তাদের অনেকেরই ‍আর্থিক অবস্থা ভালো না। নেই ভালো মানের ক্রীড়া সামগ্রী কেনার। কোনোরকমে চলছে তাদের ‍ক্রিকেটার হওয়ার সংগ্রাম।

পরিবার থেকেও মাঝে মাঝে চাপ আসে। অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সাইফুল হোসেন জানালেন তার স্বপ্ন ও সীমাবদ্ধতার কথা, ‘স্বপ্ন ক্রিকেটারই হওয়া। আমি ব্যাটসম্যান এবং উইকেটরক্ষক। স্বপ্ন তো আছে, লেগে থাকি, দেখি কি হয়। বাসা থেকে খেলতে আসতে মানা করে। বলে- কি হবে ক্রিকেট খেলে? তারপরও আমার স্বপ্ন নিয়েই আমি আছি। ’

বাকিরা সাইফুলের দিকে তাকিয়ে চুপ করে সব শুনলেন। সবার মনের কথাই যেন বলে দিলেন সাইফুল!

** খেলার মাঠে ছুটির সকাল

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫
এসকে/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ক্রিকেট এর সর্বশেষ