ঢাকা: বিপিএলের তৃতীয় আসরের ফাইনালে বরিশালের ছুঁড়ে দেওয়া ১৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথম দুই ওভারে দারুণ খেললেও ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ফিরে যান লিটন দাস।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৮ ওভার শেষে কুমিল্লা এক উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৬৬ রান।
কুমিল্লার হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন লিটন দাস এবং ইমরুল কায়েস। প্রথম দুই ওভারে কুমিল্লার দুই ওপেনার তুলে নেন ২১ রান।
এর আগে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলস মাশরাফি বিন মর্তুজার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে সংগ্রহ করে ১৫৬ রান। ৪ উইকেট হারানো বুলসের হয়ে ব্যাট হাতে সফল হন দলপতি মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ, শাহরিয়ার নাফিস আর সেকুজে প্রসন্ন।
২৩ দিনের জমজমাট লড়াইয়ের পর কুমিল্লা-বরিশালের মধ্যকার শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হয়। হাইভোল্টেজ এ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নেন কুমিল্লার দলপতি মাশরাফি। ব্যাট হাতে বরিশালের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন মেহেদি মারুফ এবং সেকুজে প্রসন্ন।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে বুলসের ওপেনার মেহেদি মারুফ এলবির ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। আসহার জাইদির বলে সাজঘরে ফেরেন মারুফ। আউট হওয়ার আগে ১৩ বলে একটি ছক্কায় ১১ রান করেন মারুফ।
দলীয় ১৯ রানের মাথায় ওপেনার মেহেদি মারুফ ফিরে গেলে ব্যাট হাতে নামেন টাইগার ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান। আরেক ওপেনার সেকুজে প্রসন্নের সঙ্গে জুটি বাধেন রানে ফেরা সাব্বির। তবে, ইনিংসের অষ্টম ওভারে বিদায় নেন প্রসন্ন। ব্যাটে দারুণ ঝড় তুলে স্টিভেন্সের বলে বোল্ড হওয়ার আগে লঙ্কান তারকা প্রসন্ন ১৯ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৩ রান করেন।
বরিশাল প্রথম ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৬৭ রান।
বরিশালের সমর্থকদের আরেকটি বড় ইনিংসের দাবী পূরণ করতে পারেননি সাব্বির। গত দুই ম্যাচের মতো ফাইনালের মঞ্চে হাসেনি তার ব্যাট। মাশরাফির করা ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হন সাব্বির (৯)। দলকে কিছুটা পিছিয়ে রেখে সাব্বির বল মোকাবেলা করেন ১৯টি। তার বিদায়ে ব্যাট হাতে আসেন দলপতি মাহামুদুল্লাহ।
টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে দলীয় ৬৮ রানের মাথায় হারায় বরিশাল বুলস। এরপর বড় জুটির ইঙ্গিত দিয়ে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ব্যাটসম্যান মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ এবং শাহরিয়ার নাফিস। ২৭ বলে তারা দু’জন স্কোবোর্ডে আরও ৫০ রান যোগ করেন। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ৯৭ ম্যাচ খেলা মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ এ ম্যাচের মধ্যদিয়ে দেড় হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন।
শেষ ওভারে বিদায় নেন বরিশাল দলপতি মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। কুলাসেকারার বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি ৩৬ বলে ৪৮ রান করেন। অর্ধশতক থেকে দুই রান দূরে থাকতে আউট হলেও তার ব্যাট থেকে আসে ছয়টি চার আর একটি ছক্কা।
শাহরিয়ার নাফিস ৩১ বলে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ২টি চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার। কেভিন কুপার দুটি বল মোকাবেলা করে ৭ রান অপরাজিত থাকেন।
কুমিল্লাহ হয়ে ৪ ওভার বল করে মাশরাফি ২৮ রান খরচায় তুলে নেন একটি উইকেট। ৪ ওভারে জাইদির খরচ হয় ২৬ রান, দখল করেন একটি উইকেট। ৪ ওভারে ৩৫ রানের বিনিময়ে কোনো উইকেট তুলে নিতে পারেননি আবু হায়দার। স্টিভেন্স ৩ ওভারে ১৯ ও নাঈম জুনিয়র এক ওভারে ৯ রান দিয়ে থাকেন উইকেট শূন্য। লঙ্কান পেসার কুলাসেকারা ৪ ওভারে ৩৭ রান খরচ করে একটি উইকেট তুলে নেন।
এর আগে ১০ ম্যাচের ৭টি জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে নেট রানরেটে এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষস্থান নিয়ে প্রথম দল হিসেবে মাশরাফির কুমিল্লা উঠে যায় শেষ চারে। শেষ চারেও সেই একই ঝলক অব্যাহত থাকে মাশরাফিদের। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুরকে ৭২ রানে হারিয়ে উঠে যায় স্বপ্নের ফাইনালে। অপরদিকে কুমিল্লার সমান ১০ ম্যাচের ৭টিতে জয় নিয়ে ১৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করলেও নেট রানরেটে পিছিয়ে থেকে শেষ চার নিশ্চিত করে রিয়াদের বুরিশাল। এলিমিনিটর ম্যাচে ঢাকাকে আর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুরকে হারিয়ে কুমিল্লার সঙ্গী হয় বরিশাল।
বরিশাল একাদশ: মাহামুদুল্লাহ, সাব্বির রহমান, আল আমিন হোসেন, শাহরিয়ার নাফিস, মেহেদি মারুফ, নাদিফ চৌধুরি, রনি তালুকদার, সেকুজে প্রসন্ন, মোহাম্মদ সামি, কেভিন কুপার এবং রায়াদ এমরিত।
কুমিল্লা একাদশ: মাশরাফি, লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, শুভাগত হোম, নাঈম ইসলাম (জুনিয়র), আবু হায়দার, অলোক কাপালি, স্টিভেন্স, আসহার জাইদি, আহমেদ শেহজাদ এবং কুলাসেকারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫
এমআর