ঢাকা: আগামী ১৫ জানুয়ারি থেকে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার চার ম্যাচ সিরিজের টি-টোয়েন্টি।
সিরিজটি শুধুই যে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়-পরাজয়ের সমীকরণের নির্ণায়ক হবে তাই নয়।
শুধু তাই নয়, এ সিরিজ থেকেই এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য সেরা টিম কম্বিনেশন বের করে আনাও সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই, এশিয়া কাপ ক্রিকেট। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ০৬ মার্চ বাংলাদেশে বসবে এর ১৩তম আসর। তার পরেই ভারতে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ০৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টি চলবে ০৩ এপ্রিল পর্যন্ত। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজটি দিয়ে টিম বাংলাদেশ’র সুযোগ থাকছে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিও সেরে নেওয়ার।
ক্রিকেটের এমন দুই মেগা আসরকে সামনে রেখে, আসন্ন সিরিজে জিম্বাবুয়েকে অপক্ষোকৃত কম শক্তিশালী দল হিসেবে বিবেচনা না করে বরং শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে নিয়ে নিজেদের তৈরি হবার পরামর্শ দিলেন এ ক্রিকেট বোদ্ধা।
‘অবশ্যই জিম্বাবুয়ে সিরিজটি বাংলাদেশকে এশিয়া কাপের জন্য বেশ ভালোভাবে প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে। গেলো একমাস ধরে মাশরাফি, সাকিবরা কোনো খেলার মধ্যে নেই। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়েই তারা খেলায় ফিরবে। এছাড়াও ক্রিকেটাররা বিপিএলের পর ছুটিতে থাকায় তাদের ফিটনেস ঘাটতি থাকতে পারে, যা এই সিরিজ দিয়েই তারা পুরণ করার সুযোগ পাচ্ছে। ’
আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ অবস্থান করছে নয় নম্বরে, যেখানে জিম্বাবুয়ের অবস্থান ১৪। এই ভেবে স্বাগতিক বাংলাদেশ হয়তো কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারে। কিন্তু তাদের স্বস্তিতে থাকার কোনো কারণ নেই বলে মনে করেন শফিকুল হক হীরা।
তার মতে, টি-টোয়েন্টি হলো এমন এক শক্তির খেলা যেখানে চার ওভারেই ম্যাচের ভাগ্য ঘুরে যেতে পারে। আর জিম্বাবুয়ের যে টিম কম্বিনেশন, তাতে তাদের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা সহজ হবে না। তার প্রমাণ, গেলো বছরের নভেম্বরে বাংলাদেশর বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে জয় নিয়েই তারা দেশে ফিরেছে। তাই তাদের বিপক্ষে জিততে হলে প্রতিটি ম্যাচেই সেরা খেলাটি খেলতে হবে।
‘ওদের পাওয়ার হিটার রয়েছে। অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা রানে না থাকলেও যেকোনো সময়ই রানে ফিরতে পারেন। এছাড়া ম্যালকম ওয়ালার, হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, ক্রেইগ আরভিন, সিকান্দার রাজা ভালো ফর্মে রয়েছেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, দলটি বর্তমানে খেলার মধ্যেই রয়েছে। যদিও তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজে ৩-২ এ হেরেছে। তবে তাতে কিছু এসে যায় না। মোট কথা, সিরিজটিকে হালকা ভাবে না নিয়ে গুরুত্ব সহকারে নিলে আখেরে বাংলাদেশ দল উপকৃত হবে। ’
এই সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে আপনার কী পরামর্শ, এমন প্রশ্নের জবাবে এ বিশেষজ্ঞ জানান, ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ দলকে অবশ্যই ভালো করতে হবে। ওপেনিং থেকে শুরু করে একেবারে টেল এন্ডার পর্যন্ত। ওপেনিংয়ে তামিম, ইমরুল ফর্মে রয়েছেন, তবে টপ অর্ডারে সৌম্য, মুশফিককে রান করতে হবে। আর নতুন আসা কাজী নুরুল হোসেন সোহানকেও। শুনেছি, ও সাত নম্বরে বেশ ভালো ব্যাটিং করে। তাই তার প্রতিও আমাদের প্রত্যাশা বেশি। আশা করছি, সোহানও দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দিতে সাহায্য করবে। সামনে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তাই এই সিরিজে বাংলাদেশ দলের দলীয় সংগ্রহ ১৪০ থেকে ১৪৫ করলে হবে না, ১৬০ হতে হবে।
এদিকে, বোলিংয়ে স্বাগতিকদের তিনজন সিমার নিয়ে খেলার পরামর্শ দিলেন টাইগারদের এ টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য। কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান ও বিপিএলে সেরা উইকেট শিকারি নবাগত আবু হায়দার রনির সঙ্গে জুড়ে বোলিংয়ে দিলেন আলামিন হোসেনকে। আর স্পিনাররাতো রয়েছেনই।
চার ম্যাচের এই টি-টোয়েন্ট সিরিজটি হবে খুলনায়। ভেন্যুটিতে সর্বশেষ গেলো বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট খেলেছিলো টাইগাররা।
লম্বা বিরতির পর এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্টেডিয়ামের উইকেট কন্ডিশন কেমন হবে বলে আপনি মনে করেন? উত্তরে তিনি জানালেন, যেহেতু চারটি ম্যাচই খুলনায় হবে তাই কোচ ও অধিনায়কের পরামর্শ নিয়ে উইকেট তৈরি করাই ভালো। তবে উইকেট স্পোর্টিং হলে ভালো হয়।
সব শেষে বললেন, উইকেট যেমনই হোক সিরিজটি জিততে হলে এবং আসন্ন এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভালো প্রস্ততি নিতে হলে এ সিরিজেই ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, ১১ জানুয়ারি, ২০১৬
এমআর/এসএস