ঢাকা: দুই বছর পর আবারও ঘরের মাঠে এশিয়া কাপ। আবেগ-উত্তাপ সব একই আছে, বদলেছে ফরমেট।
যতই বদল আসুক বাংলাদেশের জন্য এশিয়া কাপ বিশ্বকাপের সমতুল্যই! এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই বাংলাদেশের কাছে বিশ্বকাপের মতোই মর্যাদার একটি আসর। যে আসরের শিরোপা এখনো অধরা টাইগারদের কাছে। এবার নতুন স্বপ্ন নিয়ে এশিয়া কাপ-অভিযান শুরু করছে বাংলাদেশ। স্বপ্নটা অবশ্যই ওয়ানডের মতো করে টি-টোয়েন্টিতেও সফলতা পাওয়ার।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পাঁচ দলের এ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচেই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে ২০১২ সালে ফাইনালে ওঠা। ২০১৪ সালে আবার ব্যর্থতায় আছড়ে পড়ে টাইগাররা। চার ম্যাচেই জয়হীন থাকে মুশফিকুর রহিমের বাংলাদেশ। সেবার আফগানিস্তানের সঙ্গেও হারের লজ্জা বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে! তবে এখনকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নিকট অতীতের পারফরম্যান্স বিবেচনায় মোমেন্টামটা এবার থাকছে বাংলাদেশের পক্ষে। গত বছর ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বড় বড় দলকে হারিয়ে যে মোমেন্টাম তৈরি করে রেখেছে মাশরাফির দল সেটি টি-টোয়েন্টিতে প্রবাহিত হলে আসতে পারে সাফল্য। সে সাফল্য পেতে হলে অবশ্য প্রথম ম্যাচেই ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে জ্বলে উঠতে হবে মাশরাফির দলকে। টি-টোয়েন্টি ৠাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দলকে যে হারানো সহজ হবে না সেটি জানেন মাশরাফিও।
ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তাই স্বপ্ন মনের ভেতরেই চাপা রেখে সতর্ক করলেন সতীর্থদের, খেলতে বললেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে, ‘ভারত বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দল। ওদের হারাতে গেলে আমাদের তিন বিভাগেই আপ টু মার্ক থাকতে হবে। আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে ম্যাচটি খেলতে পারি। ফল কি হবে সেটা নিয়ে চিন্তা করার থেকে ভালো খেলা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাই চিন্তা করছি। আর নিজেদের দিনে যেকোনো কিছুই হতে পারে। ’
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দুর্বলতা কাটানোর শুরুটা হতে পারে এশিয়া কাপেই। দলের অধিনায়ক মাশরাফি এমনই স্বপ্ন দেখছেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা একটা জিনিস নিয়ে ভাবতে পারি, ব্যর্থতা নিয়ে না ভেবে ভালো ক্রিকেট খেলা। টি-২০’তে পারিনি এটা সত্যি কথা। পারিনি, এটা সব সময় ভেবে খেলতে থাকলে কখনোই পারব না। আমরা চেষ্টা করছি ব্যর্থতা নিয়ে না ভাবতে। যেটা আমরা ওয়ানডেতে করে আসছি। আমরা যদি এটা করতে পারি অবশ্যই আমরা ভালো করবো। ’
বাংলাদেশের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল না থাকায় ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকারের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন ইমরুল কায়েস অথবা মোহাম্মদ মিথুন। গেল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সাহস নিয়ে খেলা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসানও থাকতে পারেন একাদশে।
ব্যাটিং অর্ডারে তিন নম্বরেই রাখা হতে পারে সাব্বির রহমানকে। এছাড়া মিডল অর্ডারে থাকছেন সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকরা। মাশরাফি, মুস্তাফিজ ও আল আমিন যথারীতি থাকছেন পেস আক্রমণে। স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে থাকতে পারেন আরাফাত সানি।
পিঠের ইনজুরির কারণে বাংলাদেশের বিপক্ষে না খেলার সম্ভাবনাই বেশি ভারতের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির। তার বদলি হিসেবে ভারত থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে আরেক উইকেটরক্ষক পার্থিব প্যাটেলকে। ভারতের অধিনায়কত্বের ভার দেওয়া হতে পারে টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে।
এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে নামার আগে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ও ভারতের অনুশীলন হয়েছে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে।
এর আগে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি হয়েছে মাত্র দুই বার। দু’বারই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ২০০৯ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ভারত লড়াই হয়েছিল ইংল্যান্ডের ট্রেন্টব্রিজে। মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের কাছে হারে ২৫ রানের ব্যবধানে।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয়বার দেখা তারও পাঁচ বছর পর। ২০১৪ সালে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বের ম্যাচে বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারায় ভারত।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিথুন/ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান সোহান (উইকেটরক্ষক), মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), আরাফাত সানি, মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন।
ভারতের সম্ভাব্য একাদশ: শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, সুরেশ রায়না, যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনি/ পার্থিব প্যাটেল (উইকেটরক্ষক), হারদিক পান্ডে, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ, আশিষ নেহরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
এসকে/এমআর