আইসিসির বিরুদ্ধে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, বিসিসিআই এর বিদ্রোহের ঘোষণায় তোলপাড় শুরু হয় বিশ্ব ক্রিকেটে। আইসিসি বরাবর আইনি নোটিশ পাঠাতে তোড়জোড় শুরু করেছিল দুই বিদায়ী বিসিসিআই কর্মকর্তা এন শ্রীনিবাসন ও অনুরাগ ঠাকুর।
পাকিস্তানের সাবেক টেস্ট তারকা জহির আব্বাস জানান, ‘যদি ভারত চিন্তা করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বর্জন করবে, তাহলে এটা তাদের জন্য তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্যই তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। ’
প্রতিটি সদস্যভুক্ত দেশের সাথেই আইসিসির মেম্বার্স পার্টিসিপেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (এমপিএ) চুক্তি আছে যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি না খেললে ধরে নেয়া হয় এই চুক্তিটি ভঙ্গ করা হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ২০১৯ ও ২০২৩ বিশ্বকাপ, ২০১৭ ও ২০১৯ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০১৭ ও ২০২১ নারী বিশ্বকাপ, ২০১৮, ২০২০ ও ২০২২ সালে অনুষ্ঠেয় তিনটি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তিনটি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ও ২০২১ সালের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বঞ্চিত হতে হবে ভারতকে।
এমন পরিস্থিতি ক্রিকেটের জন্য ভয়াবহ ফল ডেকে আসবে জানিয়ে জহির আব্বাস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ এমনিতেই অল্প। তার ওপর ভারত এই ক্রিকেট বাণিজ্যে বড় একটা ভূমিকা রাখে। ক্রিকেটের মূল দল গুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম। যদি তারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে ইংল্যান্ডে না যায়, তাহলে সেটা অন্য সব দেশের জন্যই ক্ষতির কারণ হবে। আমি আশা করি ভারত এমন সিদ্ধান্ত নেবে না। ’
গত এপ্রিলে আইসিসি সভায় ভারত নিজেদের দাবী অনুযায়ী ৫৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চেয়েছিল। তবে আইসিসি সমবন্টন অনুযায়ী তাদের ১০০ মিলিয়ন বেশি দিয়ে মোট ৪০০ মিলিয়ন দিতে রাজি হয়। কিন্তু ভারত এই প্রস্তাবে একমত হয়নি। পরবর্তীতে আইসিসি এই ব্যাপারটি সুরুহা করতে সহযোগী দেশ নিয়ে ভোটাভুটি করে। যেখানে ভারতকে ২৯৩ মিলিয়ন দেয়ার পক্ষে সহযোগী দেশগুলো ভোট দেয়।
ভারতের দাবী অনুযায়ী রাজস্ববাবদ বিসিসিআই আইসিসিকে মোট রাজস্বের ৭০ ভাগ দিয়ে থাকে। তারপরেও ৫৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আইসিসি থেকে না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে তারা আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশ নিতে অনীহা বোধ করছে।
২০১৬ সালের জুনে আইসিসির প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অবসর নেওয়া জহির আব্বাস এ প্রসঙ্গে যোগ করেন, ‘আইসিসির বেশিরভাগ সদস্য (১৩:১) সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ‘বিগ থ্রি’ তাদের পছন্দ নয়। এটা থাকায় অন্য ক্রিকেট বোর্ডগুলো সুযোগ কম পেয়েছে। তারা যেহেতু জেনে-বুঝেই ভোট দিয়েছে সেহেতু ভারতকেও এটা মেনে নিতে হবে। ’
এদিকে, নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও ভারত এখনও তাদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল ঘোষণা করেনি। আশা করা হচ্ছে আগামী ০৭ মে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়ে দল ঘোষণা করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ০৪ মে ২০১৭
এমআরপি