আর ৬ ম্যাচে ২০১ রান নিয়ে ব্যাটসম্যান তালিকায় ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ওপেনার ইমরুল কায়েস আছেন গড় রানের হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সব খেলোয়াড়ের মাথার ওপরে।
চলতি আসরে ইমরুলের ইনিংস সর্বোচ্চ রান ৪৭ হলেও ২ ইনিংসে নটআউট থাকার কারণে গড় ৫০.২৫।
যদিও গড় পরিসংখ্যানের এ তালিকায় ইমরুলের অবস্থান নবম, কিন্তু বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে ৫৮ গড় নিয়ে তার ওপরে আছেন কেবল রংপুর রাইডার্স এর নাহিদুল ইসলাম। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ১টি ম্যাচ খেলায় নাহিদের অবস্থানকে স্থিতিশীল বা প্রকৃত পারফরমেন্স ধরা মুশকিল। তাই সার্বিক বিচারের গড় তালিকায় ইমরুলই ওপরে।
৩ ম্যাচে ৪৩.৫০ গড় নিয়ে ইমরুলের পর দশম স্থানটিতে আছেন রাজশাহী কিংসের জাকির হাসান। তবে এ পর্যন্ত অংশ নেওয়া প্রতিটি ম্যাচেই অপরাজিত থাকায় মাত্র ৮৭ রান নিয়েও গড় বেশী তার।
এই গড় তালিকায় শীর্ষ দশ এর আর ৭ জনই বিদেশি খেলোয়াড়।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ব্যাটসম্যানের তালিকায় সেরা পাঁচে স্থান করে নেওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান মাহমুদ উল্লাহর সর্বোচ্চ স্কোর ৫৯। স্ট্রাইক রেট ১৩২.৬২। এই রান তুলতে ২৩টি বাউন্ডারি এবং ৭টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন তিনি। নট আউট থেকেছেন ১টিতে। হাঁকিয়েছেন ২টি অর্ধশতক। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই মিডল অর্ডারে নেমে দলের বেজ গড়ে দিচ্ছেন তিনি।
তুলনামূলক বিচারে, সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় মাহমুদ উল্লাহ’র ওপরে থাকা একমাত্র ব্যাটসম্যান রবি বোপারার ৩ ইনিংসে নট আউট থাকায় গড়ও বেশী, ৬৯.৫০। তবে তার হাঁকানো অর্ধশতক সংখ্যা উভয়ের সমান হলেও স্ট্রাইক রেটে (১২৩.০০) রবি বোপারার চেয়ে প্রায় ১০ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন মাহমুদ উল্লাহ। উভয়ের ওভার বাউন্ডারির সংখ্যা সমান হলেও বোপারার চেয়ে ২টি বেশী বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন মাহমুদ উল্লা।
মাহমুদ উল্লাহার পর সবচেয়ে বেশী রান সংগ্রাহক তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ঢাকা ডাইনামাইটস এর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান হার্ড হিটার এভিন লুইস। ৭ ম্যাচে তার মোট রান ২৩৯।
চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছেন যথাক্রমে সিলেট সিক্সার্স এর দুই ব্যাটসম্যান এডিএস ফ্লেচার ও উপুল থারাঙ্গা। ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফ্লেচারের মোট রান ৭ ম্যাচে ২৩৪। শ্রীলংকান থারাঙ্গার মোট রান ৬ ম্যাচে ২০৭।
এ তালিকায় শীর্ষ দশের সর্বশেষ স্থানটি রংপুর রাইডার্স এর মোহাম্মদ মিথুনের। ৭ ম্যাচে ২৪ গড়ে তার মোট রান ১৬৮। স্ট্রাইক রেট ১১৫.০৬।
সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের সেরা দশে ৭ জনই বিদেশি।
এর বাইরে ৭ ম্যাচে ১৬১ রান নিয়ে রাজশাহী কিংসের মমিনুর হক ১১তম ও সমান ম্যাচে ১৪২ রান নিয়ে খুলনা টাইটানসের আরিফুল হক আছেন ১৫তম অবস্থানে।
৮ ম্যাচে ১৪২ রান নিয়ে সিলেট সিক্সার্স অধিনায়ক নাসির হোসেন ১৬তম এবং সমান সংখ্যক ম্যাচে ১৩৬ রান নিয়ে দলের আইকন প্লেয়ার সাব্বির রহমান উনিশতম স্থানে অবস্থান করছেন।
৭ ম্যাচে ১২০ রান নিয়ে ২১তম স্থানে আছেন রাজশাহী কিংস অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৬ ম্যাচে ১০৮ নিয়ে ২৩তম স্থানে আছেন চট্টগ্রাম ভাইকিংস এর আইকন প্লেয়ার সৌম্য সরকার। একই দলের এনামুল হক সমান সংখ্যক ম্যাচে ১০৩ রান নিয়ে ২৫ ও রংপুর রাইডার্স এর শাহরিয়ার নাফিস ১০১ রান নিয়ে ২৬তম স্থানে অবস্থান করছেন।
আর কোনো দেশি ব্যাটসম্যানই এ পর্যন্ত সব ম্যাচ মিলিয়ে শত রান পূরণ করতে পারেননি। ৬ ম্যাচে ৯৯ রান নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের লিটন দাস ২৮ ও ৭ ম্যাচে ৮৭ রান নিয়ে সাকিব আল হাসান ৩১তম অবস্থানে আছেন। মাত্র ৩ ম্যাচ খেলেই সাকিবের সমান রান নিয়ে গড় আর স্ট্রাইক রেটে সাকিবের ওপরে আছেন রাজশাহী কিংসের জাকির হাসান। ৬ ম্যাচে ৯২ রান নিয়ে ঢাকা ডাইনামাইটসের জহিরুল ইসলামের অবস্থান তাদেরও ওপরে।
জাতীয় দলে খেলেছেন এমন কোনো ব্যাটসম্যানের রান সাকিবের নিচে নয়।
আর সেরা গড় বিবেচনায় বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে ৪১.৩৩ গড় নিয়ে ইমরুলের পরই আছেন মাহমুদ উল্লাহ। এ তালিকায় তার অবস্থান ১৫তম। ৩৫.৫০ গড় নিয়ে এ তালিকায় সেরা ২০ এর মধ্যে ১৮ নম্বরে রয়েছেন খুলনা টাইটানসের আরিফুল হক ও ১৯ নম্বরে রয়েছেন সিক্সার্স অধিনায়ক নাসির।
এ তালিকার সেরা ২০এ বাকি ১৬ জনই বিদেশি খেলোয়াড়।
জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে ২৬.৩০ গড় নিয়ে মমিনুল হক সেরা গড় তালিকার ৩০ নম্বরে, ২৪ গড় নিয়ে মুশফিকুর রহিম ৩৫ নম্বরে, ১৯.৪২ গড় নিয়ে সাব্বির রহমান ৪৫ নম্বরে, ১৮ গড় নিয়ে সৌম্য সরকার ৪৭ নম্বরে অবস্থান করছেন।
সেরা গড় তালিকার সেরা ৫০ এ জায়গা করতে পারেননি বাংলাদেশ ক্রিকেটের আইকন সাবিক আল হাসান।
সার্বিক বিচারে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ। তার পরেই রয়েছেন ইমরুল কায়েস। আবার সেরা গড় বিবেচনায় দেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে ইমরুলের পরই রিয়াদের অবস্থান। বাংলাদেশের আর কোনো খেলোয়াড় তাদের ধারেকাছেও নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৭
জেডএম/