টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব সাকিব আল হাসানের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রায় সাত মাস আগে। অথচ এখনই তার টেস্ট খেলার অনাগ্রহের কথা জানা গেল।
এমন বাজে এক সিরিজ শেষে দলের পারফরম্যান্স আর সিনিয়রদের প্রসঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
বিসিবি প্রধানের বক্তব্যে বেশ কিছু প্রসঙ্গ উঠে এসেছে যা নিয়ে সিরিজ চলার সময় অনেকেই আলোচনা করেছেন। আর তা হলো কয়েকজন খেলোয়াড়ের শরীরী ভাষা। এবার তা নিশ্চিত করলেন নাজমুল হাসান পাপনও। তার কথায় উঠে এসেছে টেস্ট ক্রিকেটের বর্তমান হালচাল আর বাংলাদেশের কয়কজন সিনিয়র ক্রিকেটারের টেস্ট খেলায় অনাগ্রহের কথাও।
শুক্রবার (২০ জুলাই) সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বিসিবি প্রধান বলেন, 'আইসিসিতেও আমি দেখেছি, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়া অন্য দেশগুলোর টেস্ট খেলা নিয়ে আগ্রহ নেই। তাদের এই অনাগ্রহ বোর্ড হিসেবেই। যারা খেলা সম্প্রচার করে তারাও আগ্রহী নয়। তারা বলে যেখানে কোন দর্শক নেই সেই খেলায় তাদের আগ্রহও নেই। '
এরপরই বিসিবি প্রধান তার মন্তব্যে সাকিব-মুস্তাফিজদের মতো সিনিয়রদের টেস্ট ক্রিকেটে অনাগ্রহের কথাও বলেন। ‘আমাদের দেশে আমরা কয়কজন সিনিয়র খেলোয়াড় দেখছি যারা টেস্ট খেলতে চাচ্ছে না। সাকিব টেস্ট খেলতে চাচ্ছে না। মুস্তাফিজও খেলতে চায় না। ও বলে না যে আমি খেলব না। কিন্তু এডিয়ে চলতে চায়। হয়তো সে ইনজুরিপ্রবণ বেশি, টেস্ট খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়বে, এই জন্য হতে পারে,’ তিনি বলেন।
সিনিয়রদের অনাগ্রহের ফলে ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণে ভিন্ন দল ও নবীনদের প্রাধান্য দিয়ে টেস্ট দল সাজাতে চাইছেন পাপন। 'হয়তো তারা (সিনিয়ররা) টেস্ট ক্রিকেটকে কঠিন মনে করছে, যেমন ধরুন রুবেল হোসেন। ও অনেক অভিজ্ঞ। দীর্ঘদিন সে আমাদের সার্ভিস দিয়ে আসছে। এখন ওর জন্যও টেস্ট একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তাই, তরুণ প্রজন্ম থেকে আমাদের নতুন নতুন খেলোয়াড় নিয়ে আসতে হবে। '
টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির জন্য আলাদা দল গড়া হবে বলেও জানান বিসিবি প্রধান। তবে নতুন খেলোয়াড় আনলেও কয়কজন কমন খেলোয়াড় সব দলেই থাকবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাজে ফলাফলের জন্য সেখানকার প্রতিকূল কন্ডিশন আর যে ডিউক বলে খেলা হয়েছে তার দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন পাপন। তার মতে, এই ডিউক বলে অনভ্যস্ততার কারণে ভুগতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। বাংলাদেশ সাধারণত নিজেদের মাটিতে এসজি বলে খেলে অভ্যস্ত। আর দেশের বাইরে খেলতে গেলে কোকা বোরা বলে খেলে। ফলে ব্যাটিংয়ে তামিম-মুশফিকদের যেমন ভুগতে হয়েছে, তেমনি বল থেকে সুবিধা আদায় করতে পারেন নি পেসাররা।
শুধু বল আর কন্ডিশনই নয়, বরং ওয়েস্ট ইন্ডিজে যে ধরণের পিচ তৈরি করা হয় তা নিয়েও কথা বলেন বিসিবি প্রধান। 'এইবার সফরে যাওয়ার আগে ওদের মতো পিচ বানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বানানো যাচ্ছে না। দেখার বিষয়, কি করলে ওরকম পিচ বানানো যায়। নতুন কিউরেটরদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। '
বাউন্সি পিচের চাহিদা নিয়ে এর আগে অনেকবার বলা হলেও বাস্তবে বাংলাদেশের পিচগুলো এখনও স্পিনবান্ধব হিসেবেই তৈরি করা হয়। এই ধারা থেকে না বেরোতে পারলে বিদেশের মাটিতে ভুগতে হবে টাইগারদের। দেরিতে হলেও বিসিবি প্রধান বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছেন, এখন তা বাস্তবায়ন হলেই হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
এমএইচএম