ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দলের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে ব্যাট হাতে দারুণ লড়াই করে দেখিয়েছেন সাকিব-তামিমরা। ক্যারিবিয়ানদের পিচের অদ্ভুত চরিত্রকে দারুণভাবে সামলেছেন এই দুই ব্যাটিং মায়োস্ত্রো।
ব্যাট হাতে তামিমের শতক অনেক ধিরস্থির একটি ইনিংসের প্রতিচ্ছবি। ইনিংসের আদ্যোপান্ত ব্যাটিং করে ১৬০ বল খেলে ১৩০ রানের ধৈর্যশীল এক ইনিংস উপহার দিয়েছেন তামিম। স্বভাববিরুদ্ধ এমন ইনিংসের কারণ আর কিছু না, বিরুদ্ধ পিচে উইকেট ধরে রাখা আর রানের চাকা সচল রাখা। যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তার ৯৭ রানের ইনিংসটি দলকে মাঝারি মানের সংগ্রহ এনে দেয়। অল্পের জন্য তার ৮ম সেঞ্চুরি মিস হয়তো আক্ষেপ জাগাতে পারতো কিন্তু দলের জয় নিশ্চয়ই তা আর হতে দেয়নি।
শেষদিকে মুশফিকুর রহিমের ৩০ রানের ক্যামিওটি দারুণ কার্যকর সাব্যস্ত হয়। কারণ তার ওই ঝড়ো ইনিংসটি ২৭৯ রানের লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেয় বাংলাদেশী বোলারদের। এদিন বোলারদের জন্য এক দারুণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি নিজেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিধ্বংসী দুই ওপেনার ক্রিস গেইল আর এভিন লুইসকে রান করা থেকে আটকে রেখে জয়ের ভিত্তি মূলত তিনিই গড়ে দেন, যার সুফল বাকি সব বোলার ভোগ করেন।
তবে দিনশেষের নায়ক কিন্তু মাশরাফিই। তার নেয়া ৪ উইকেটই মূলত পার্থক্য গড়ে দেয়। সেই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েই এদিন জ্বলে উঠেন বাকি বোলাররাও। ফলে ২৩১ রানে থেমে যায় ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস। এই জয় বাংলাদেশের জন্য বিশেষ কিছু। কারণ সেই জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলার পর এই প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ। আর তাতেই বাজিমাত। কে বলবে এই দলটি এই সেদিনই এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে তুলোধোনা হয়েছে?
প্রথম ম্যাচের দলে দুইজন ক্রিকেটারের খেলা আবারও প্রশ্ন জাগিয়েছে। ওপেনিংয়ে আনামুল হক বিজয়কে কেন রাখা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর দায় অবশ্য তার নিজেরই। শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরা এই ব্যাটসম্যানের স্থলে লিটন দাসকে পরের ম্যাচেই দেখা যেতে পারে হয়তো। আর সাব্বির যেনো তার দুঃসময় কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। মাত্র ৩ রান করে তার অমন স্ট্যাম্পড হয়ে যাওয়া বহুদিন থেকেই তাকে নিয়ে চলে আসা প্রশ্নটাকে আরও শক্ত ভিত্তিই দিয়েছে।
বুধবার (২৫ জুলাই) প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের ভেন্যু গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলদেশ।
আগের ম্যাচে অধিনায়ক মাশরাফির দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মাঠে সেরা পারফরম্যান্স দেখিয়েছে টাইগাররা। এবারও একই মন্ত্রে সিরিজ জয় নিশ্চিত করার প্রত্যাশা নিয়ে মাঠে নামবেন মাশরাফিরা। বিশেষ করে অধিনায়ক মাশরাফির দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার মানসিকতাই দলকে সদ্য ফেলে আসা বাজে অতীত ভুলতে সাহায্য করেছে। পরের ম্যাচেও তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৮
এমএইচএম