তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে বুধবার (১ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৬টায় সেইন্ট কিটসে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডে সিরিজে পরাজিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিশ্চিতই এই সিরিজ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে।
৯ বছর পর বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জেতা বাংলাদেশ দল টি-টোয়েন্টিতে এখনও নিজেদের সেরাটা দেখাতে পারেনি। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রিয় ফরম্যাট এই টি-টোয়েন্টি। আসন্ন সিরিজের দলে বিধ্বংসী ওপেনিং ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইলের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও তারা যথেষ্ট শক্তিশালী দল। এভিন লুইস, আন্দ্রে ফ্লেচারের মতো টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান আছে তাদের। টি-টোয়েন্টি দলে আরও আছেন মারলন স্যামুয়েলস, কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের মতো তারকা ক্রিকেটাররা। ফর্মে থাকা রোভম্যান পাওয়েল এবং আন্দ্রে রাসেল যারা ম্যাচের গতিপথ নিমিষেই পাল্টে দিতে পারেন। তাছাড়া উইকেটরক্ষক দিনেশ রামদিন কিংবা চাদউইক ওয়াল্টনরাও নিজেদের দিনে আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণও বেশ সংগঠিত। স্যামুয়েল বদ্রি, শেলডন কোটরেল, অ্যাশলে নার্স, কিমো পল এবং কেসরিক উইলিয়ামসের মতো বোলাররা টি-টোয়েন্টিতে বেশ কার্যকর। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণের নেতৃত্ব থাকবেন আন্দ্রে রাসেল ও ব্র্যাথওয়েটের ওপরই।
বাংলাদেশ দলে ব্যাটিংয়ের মূল দায়িত্ব থাকবেন বরাবরের মতোই সিনিয়র ক্রিকেটার তথা তামিম, সাকিব, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহর ওপর। তাদের অভিজ্ঞতাই দলের মূল ভরসা। ওয়ানডে সিরিজেও তারা রানের ধারায় ছিলেন। কিন্তু তাদের ওপর অতি নির্ভরতা দলের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। সাব্বির কিংবা মোসাদ্দেকের মতো তরুণ ক্রিকেটারদের তাই দায়িত্ব সামলাতে হবে। ওয়ানডে সিরিজে মাঠে নামার সুযোগ না পাওয়া লিটন দাস হয়তো টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পেতে পারেন। স্কোয়াডে থাকা সৌম্য সরকার কিংবা আরিফুল হকেরও সুযোগ আছে একাদশে স্থান পাওয়ার।
বরাবরের মতোই বোলিংয়ের নেতৃত্ব থাকবে পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের কাঁধে। অভিজ্ঞ রুবেল হোসেনও তার সহযোগী হিসেবে থাকবেন। তবে তরুণদের মাঝে আবু হায়দার, আবু জায়েদের ওপরও দায়িত্ব বর্তাবে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখার।
স্পিন আক্রমণে বেশ সংগঠিত বাংলাদেশ দল। মিরাজ ভাল ফর্মে আছেন। সাকিব তো সন্দেহাতীতভাবে দলের সেরা ও অভিজ্ঞ স্পিনার। স্পিন নির্ভর দল সাজালে হয়তো সুযোগ হবে তরুণ স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর।
টি-টোয়েন্টিতে সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে সমতা বিরাজ করছে। গত ৫ ম্যাচে দুই দলেরই ১ জয়ের বিপরীতে হার ৪টিতে।
যেহেতু মোস্তাফিজের একাদশে থাকা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই, সেক্ষেত্রে দলে আবু হায়দারের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। ব্যাটিং অর্ডারের ৭ নম্বর স্থানটিতে সাব্বিরের জায়গায় হয়তো সুযোগ পাবেন আরিফুল। আর ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী হবেন সৌম্য কিংবা লিটনের মধ্যে একজন। কিংবা টপ অর্ডারে তাদের দু‘জনই সুযোগ পেতে পারেন।
বাংলাদশের সম্ভাব্য একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ, আরিফুল হক, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল ইসলাম, আবু জায়েদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে গেইল না থকায় ওপেনিংয়ে থাকবেন এভিন লুইস ও আন্দ্রে ফ্লেচার। তৃতীয় ওয়ানডেতে দারুণ খেলা রোভম্যান পাওয়েলের একাদশে থাকা প্রায় নিশ্চিত। টেস্ট আর ওয়ানডেতে অনুপস্থিত থাকা মারলন স্যামুয়েলসের একদশে থাকা অনেকটা নিশ্চিত।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সম্ভাব্য একাদশ: এভিন লুইস, আন্দ্রে ফ্লেচার, মারলন স্যামুয়েলস, দিনেশ রামদিন, আন্দ্রে রাসেল, রোভম্যান পাওয়েল, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), কিমো পল, অ্যাশলে নার্স, স্যামুয়েল বদ্রি, কেসরিক উইলিয়ামস।
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে ফর্মের বাইরে থাকা সাব্বির টি-টোয়েন্টিতে এক হাজার রানের মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে। আর মাত্র ৯৪ রান করলেই পঞ্চম বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তিতে নাম উঠবে তার। আর দল হিসেবে বাংলাদেশের সামনে দ্বিতীয়বারের মতো তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ে হাতছানি। এর আগে ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৮
এমএইচএম/এমএমএস