ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের হাতছানি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৯
ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের হাতছানি শিরোপার পাশে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহ ও রোহিত: ছবি-সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্রিকেটে অক্টোবর মাসটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে সবসময়। ঘরোয়া ক্রিকেটে বেতনবৃদ্ধিসহ ক্রিকেটারদের ১১দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন, আচমকা আইসিসি কর্তৃক সাকিব আল হাসান এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ায় কালো ছায়ায় ঢেকে গিয়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট।

তার মধ্যে সামনে ছিল ভারত সফর। সাকিবের নিষেধাজ্ঞা, তামিম ইকবালের চোট মিলিয়ে শেষ পযর্ন্ত টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য পঞ্চপাণ্ডবের তিনজনকে ছাড়াই (মাশরাফি টি-টোয়েন্টিতে অবসর নিয়েছেন) ভারত উড়াল দেয় টাইগাররা।

অভিজ্ঞ বলতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম।

দিল্লীতে তীব্র বায়ুদূষণের ভেতর মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে গত রোববার (০৩ নভেম্বর) মাঠে নামল বাংলাদেশ। যা ছিল আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ১০০০তম ম্যাচ। এমন একটি উপলক্ষ্য হাতছাড়া করেনি টাইগাররা। কয়েকদিনের ঝড়-ঝঞ্জা পার হয়ে আসা রিয়াদ-মুশফিকরা ৭ উইকেটে উড়িযে দিল রোহিত শর্মাদের। বাংলাদেশ পেলো এক ঐতিহাসিক জয়। অথচ এর আগে ভারতের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তাদেরই বিপক্ষে তিন ফরম্যাটে কখনো কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি টাইগাররা। এবার মুশফিকের অপরাজিত ৬০ রানে ভর করে সেই আক্ষেপ ঘোচায় বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টিতে সমতায় ফিরতে হলে জয় ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না ভারতের। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) রাজকোটে জয় পেলেই ঐতিহাসিক সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়ে যেত মাহমুদউল্লাহদের। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের সময়টা আরেকটু বেড়েছে। রোহিতের দানবীয় ৮৫ রানে ভর করে ৮ উইকেটের জয় তুলে সিরিজে সমতায় ফিরে ভারত।

যার কারণে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ হবে নাগপুরে, রোববার (১০ নভেম্বর)। স্বাগতিক বিধায় ফেভারিটের তকমা ভারতের পিঠে। তবে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় হাতছাড়া করতে নারাজ বাংলাদেশও। এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে পারলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য বাড়তি আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকরা।

তবে নাগপুরের সিরিজ নির্ধারণীতে ‍মূল ভূমিকা রাখতে পারে স্পিনাররা। সেক্ষেত্রে ফাইনাল ম্যাচের জন্য দু’দলের কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। পেসার শফিউল ইসলামের পরিবর্তে স্পিনার তাইজুল ইসলাম মূল একাদশে জায়গা করে নিতে পারেন। তেমনি টিম ইন্ডিয়া স্কোয়াডে পেসার খলিল আহমদকে থাকতে হতে পারে মাঠের বাইরে। তার পরিবর্তে অবশ্য মিডিয়াম-ফার্স্ট বোলার শার্দুল ঠাকুরকে নিতে পারেন রোহিত।

তবে দু’দলের মূল আলোটা থাকবে স্পিনার আমিনুল ইসলাম ও যুজবেন্দ্র চাহালের ওপর। গত ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও সফল বোলার ছিলেন আমিনুল। ভারতের ২ উইকেটই নিয়েছিলেন এই ২০ বছর বয়সী স্পিনার। প্রথম ম্যাচেও তিনি পকেটে পুরেছেন ২ উইকেট। গত ম্যাচে টাইগার ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন চাহাল। ব্রেক থ্রো এনে দিয়ে নেন ২ উইকেট। চাহালকে ডাক দিচ্ছে একটি রেকর্ডের হাতছানিও। আর ৪ উইকেট পেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে টপকে ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হবেন তিনি। ইতোমধ্যে ৩৩ ম্যাচে ২০.৮৯ গড়ে ৪৯ উইকেট শিকার করেছেন চাহাল।

স্পিনারদের পাশাপাশি ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের জন্য আবারও জ্বলতে হবে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের ব্যাট। সৌম্য সরকার দুই ম্যাচে শুরুটা দুর্দান্ত করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তেমনি লিটন দাসও। ওপেনিংয়ে ইতোমধ্যে ভরসা হয়ে উঠেছেন নাঈম শেখ। আফিফ হোসেনরা এখনও সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি।

তবে জয়ের জন্য প্রধান কাজটা করতে হবে বোলারদের। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে ফেরাতে হবে রোহিত ও ধাওয়ানকে। কেননা ভারতও সিরিজ জয়ের জন্য তাকিয়ে থাকবে এই দুই অভিজ্ঞ ওপেনিং জুটির ওপর। কারণ ইতোমধ্যে টি-টোয়েন্টিতে দু’জনে জুটি গড়ে ৫১ ম্যাচে রেকর্ড ১৭৪০ রান করেছেন।

নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ম্যাচটি রোববার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: লিটন দাস, মোহাম্মদ নাঈম, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আমিনুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম/তাইজুল ইসলাম, আল-আমিন হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান।  

ভারতের সম্ভাব্য একাদশ: রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, শ্রেয়াস আইয়ার, ঋষভ পন্ত (উইকেটরক্ষক), শিবম দুবে, ক্রুনাল পান্ডিয়া, ওয়াশিংটন সুন্দর, দীপক চাহার, খলিল আহমদ/ শার্দুল ঠাকুর, যুজবেন্দ্র চাহাল।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৯
ইউবি/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।