আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফরে টাইগারদের জন্য বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের শর্তে আপত্তি জানিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবি’র সেই আপত্তি আমলে নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলাচ্ছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি)।
শ্রীলঙ্কা সফরে বিসিবির চাওয়া ছিল ক্রিকেটারদের জন্য ৭ দিনের কোয়ারেন্টিন। পাশাপাশি অনুশীলনও চালিয়ে যাওয়া। তবে লঙ্কান ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তরফ থেকে সেদেশের বোর্ড জানিয়েছে, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে এবং এর মাঝে কোনো অনুশীলন করা যাবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন জানিয়ে দেন, লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের শর্ত মেনে সেই দেশে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা সম্ভব না।
বিসিবির স্পষ্ট অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লঙ্কান বোর্ডের কর্মকর্তারা সেদেশের শীর্ষ সরকারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠকে বসেছেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শ্রীলঙ্কার জাতীয় করোনা মহামারি প্রতিরোধ কেন্দ্রের প্রধান, সামরিক বাহিনীর বর্তমান প্রধান ও ভারপ্রাপ্ত চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল শাভেন্দ্র সিলভা। এমনটাই জানিয়েছে ‘ক্রিকবাজ’।
সেখানকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বাংলাদেশ দলের আসন্ন সফর এবং লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগের (এলপিএল) অভিষেক আসর আয়োজন যাতে সম্ভব হয় সেজন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট শাম্মি সিলভা নিজেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। তবে তার আগে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে, যাতে করোনা মোকাবিলায় তাদের সাফল্য আন্তর্জাতিকভাবে নজরে পড়ে।
এদিকে বিভিন্ন পক্ষের আলোচনার মধ্যেই সফরকারী টাইগারদের সন্তুষ্ট রাখতে এরইমধ্যে লঙ্কান বোর্ডের কর্তারা ‘জৈব-সুরক্ষা বলয়’ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া তারা টাইগারদের জন্য কোয়ারেন্টিনের ব্যাপারে ভিন্ন চিন্তা করছে।
জানা গেছে, সফরকারী বাংলাদেশ দলের জন্য দুই দেশেই কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাৎ, এক সপ্তাহ বাংলাদেশে, এক সপ্তাহ শ্রীলঙ্কায় পৌঁছানোর পর। এজন্য দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে রাজি করানোর চেষ্টা করছে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। এমনকি তারা বাংলাদেশ দলকে সেখানে পৌঁছানোর পর অষ্টম দিনের মাথায় অনুশীলন শুরুর অনুমতি দেওয়ার কথাও ভাবছে। তবে তার আগে এক সপ্তাহ অবশ্যই হোটেলে আইসোলেশনে থাকতে হবে।
আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী, সফরকারী দল কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় হোটেল রুম থেকে বের হতে পারবেন না। দলীয় মিটিং করতে হবে ‘জুম’র মাধ্যমে। তবে নতুন পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে, এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রথম সপ্তাহ থেকেই অনুশীলন করতে পারবেন তামিম-মুশফিকরা। তবে সাত দিন পর দলীয় অনুশীলন শুরু করা যাবে।
নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ দল শুরুতে হাম্বানটোটা শহরে থাকবে। এরপর ১৮-২০ অক্টোবর শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ শেষে তাদের ক্যান্ডিতে নিয়ে যাওয়া হবে। এমনকি সফরকারী দলের সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মতিও দিতে যাচ্ছে এসএলসি।
জাতীয় দল ও এইচপি দলের ক্রিকেটারসহ বেশ বড় সংখ্যার একটা দল একসঙ্গে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা। মূলত জাতীয় দলের প্রস্তুতির কথা ভেবে ও আন্তঃস্কোয়াড ম্যাচ খেলানোর জন্য তাদের নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু এই শর্ত শিথিল করবে না এসএলসি। ফলে ৩৫ থেকে ৪১ সদস্যের স্কোয়াড নিয়ে যেতে হবে সফরকারীদের।
এদিকে বিসিবিও নতুন পরিকল্পনার ব্যাপারে অবগত আছে বলে জানা গেছে। বিসিবির একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে তাদের একটা শর্ত এখানে যোগ হচ্ছে। আর তা হলো- হাম্বানটোটায় থাকা। এখানে হোটেল থেকে মাঠের দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। এজন্য গল কিংবা ডাম্বুলায় থাকার ব্যবস্থা করার দাবি জানাবে বিসিবি।
তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে টাইগারদের।
বাংলাদেশ সময়: ০১০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২০
এমএইচএম