বড় ধরনের স্বস্তি মিলল বাবর আজমের। গত নভেম্বরের শেষে পাকিস্তান অধিনায়কের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ, জোর করে গর্ভপাত এবং মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন হামিজা মুখতার নামের এক নারী।
নিজেকে বাবরের সহপাঠী হিসেবে দাবি করা হামিজা মুখতার সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। পাকিস্তানের সাংবাদিক সাজ সাদিক এক টুইটে এমনটাই জানিয়েছেন।
টুইটারে সাদিকের পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, হামিজা মুখতার আইনজীবীর সামনে এক চুক্তিনামায় সই করছেন। পরে তার আইনজীবী সেই চুক্তিনামা পড়ে শোনান। তাকে বলতে শোনা যায়, বাবরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা এবং তিনি মামলা তুলে নিচ্ছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, বাবরের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না, এখনও নেই। বরং কয়েকজন বন্ধুর প্ররোচনায় 'বিখ্যাত হওয়ার জন্য' এমন মিথ্যা অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
বিষয়টা বাবরের জন্য মানসিক প্রশান্তির। কারণ এই অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ার আগেই তাকে নিয়ে মিডিয়া ট্রায়াল করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সমালোচনাও হয়েছে অনেক। চারদিক থেকে যখন সমালোচনা ধেয়ে আসছে ওই সময় নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন বাবর। যদিও সফরে কোনো ম্যাচ না খেলেই ফিরে আসতে হয় তাকে। কারণ কুইন্সল্যান্ডে আন্তঃস্কোয়াড প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলতে গিয়ে আঙুলে চোট পাওয়ায় ছিটকে যান তিনি।
বৃহস্পতিবার হামিজার অভিযোগ শুনানির পর বাবরের বিরুদ্ধে নাসিরাবাদ পুলিশকে মামলা দাখিলের নির্দেশ দেন অতিরিক্ত বিচারক মোহাম্মদ সাঈদ। সংবাদ সংস্থা 'পিটিআই' জানিয়েছে, কোর্টে ওই নারী তার মেডিক্যাল ডকুমেন্ট দাখিল করেছেন। দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে বাবরের বিরুদ্ধে এফআইআর করার পাশপাশি নাসিরাবাদ পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন অতিরিক্ত সেশন কোর্ট। অন্য এক সেশন কোর্টের বিচারক বাবর আজম ও তার পরিবারকে নির্দেশ দেন যাতে ওই অভিযোগকারী নারীকে কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ না করা হয়।
পুরো মামলার সূত্রপাত হয় গত নভেম্বরে ওই নারী সংবাদ সম্মেলন করে বাবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর। তিনি দাবি করেন, প্রায় ১০ বছর ধরে বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে তাকে যৌন নির্যাতন করে আসছেন বাবর। তার দাবি, বাবর ও তিনি ছিলনে স্কুলের সহপাঠী। বাবর যখন ক্যারিয়ারের শুরুতে ধুঁকছিলেন তখন নাকি ওই নারী তাকে আর্থিক সহায়তা করতেন। ওই নারীর দাবি অনুযায়ী, ২০১০ সালেই নাকি তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন বাবর এবং পরের বছর কোর্টে গিয়ে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু ২০১২ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের নেতৃত্ব পাওয়া এবং জাতীয় দলের ডাক পাওয়ার পর নাকি মত পাল্টান বাবর। এমনকি পুলিশের কাছে যেতে চাইলে নাকি বাবর তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেন।
হামিজা মুখতার আরও দাবি করেন, বাবরের পেছনে অনেক খরচও করেছেন তিনি। পরে অবশ্য বাবরের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলে হামিজা মুখতার ব্ল্যাকমেল করার পাশাপাশি বাবরের কাছে ৪৫ লাখ রুপি দাবি করেছিলেন। মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে দেন-দরবার করতে গিয়ে এক পর্যায়ে ১০ লাখ রুপিও দাবি করেন হামিজা। এমনকি শেষ পর্যন্ত সেই দাবি গিয়ে ঠেকে ২ লাখ রুপিতে। কিন্তু বাবরের পক্ষ থেকে এক রুপিও দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
এমএইচএম
Hamiza Mukhtar - I did not have any relationship with Babar Azam and the allegations I made were false pic.twitter.com/3AX02wR4H9
— Saj Sadiq (@Saj_PakPassion) January 14, 2021