ঢাকা, শুক্রবার, ১৬ মাঘ ১৪৩১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের নিয়ে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের নিয়ে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে

চট্টগ্রাম: মুমিন জীবনে সফল হতে হলে কোরআন হাদিসে বর্ণিত সাত দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাত সম্পন্ন বক্তা মুফতি আমির হামজা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে নগরের প্যারেড ময়দানে ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত পাঁচদিন ব্যাপী ঐতিহাসিক তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের চতুর্থদিনের প্রধান মুফাসসিরের আলোচনায় তিনি এই কথা জানান।

ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা খাইরুল বাশার ও মাহফিল এন্তেজামিয়া কমিটির সদস্য মুহাম্মদ উল্লাহর সঞ্চালনায় ও ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলে বিশেষ অতিথির আলোচনা পেশ করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, তাফসির এন্তেজামিয়া কমিটির পৃষ্ঠপোষক ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সাবেক প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক, বিশিষ্ট সংগঠক ও সমাজসেবী মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম। আলোচনা পেশ করেন বন্দরটিলাস্থ আলী শাহ জামে মসজিদের খতীব মাওলানা মহিউদ্দিন মাহবুব।

মুফতি আমির হামজা বলেন, পৃথিবীর সূচনা থেকে মানুষ ও শয়তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্ব নিরসনের জন্য যুগে যুগে আল্লাহ নবী ও রাসুলদের (স.) পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তার বান্দা-বান্দিদেরকে সঠিক পথে নিয়ে আসার জন্য। পৃথিবীর শুরু থেকে মুমিন জীবনের যে সাত দফা কর্মসূচি আছে তা কিয়ামত পর্যন্ত চলবে। তার পাশাপাশি শয়তানেরও সাত দফা কর্মসূচি আছে। কোরআন হাদিস থেকেও শয়তানের সাত দফা কর্মসূচি সম্পর্কে পেয়েছি। এই সাত দফা বাস্তবায়নে শয়তান কিয়ামত পর্যন্ত প্রচেষ্টা চালাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের নিয়ে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্রের জবাব দিতে আমাদের দরকার ঐক্যবদ্ধ শক্তি।

বিশেষ অতিথি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে রাষ্ট্র, সমাজকে নৈতিকভাবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরও বলেন, জুডিসিয়াল ক্লিলিংয়ের মাধ্যমে এবং মিথ্যা গায়েবি মামলার মধ্যমে গত ১৬ বছরে আলেম সমাজকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করেছে। জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আল্লামা সাঈদী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ,  আব্দুল কাদের মোল্লা, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ নেতাদেরকে হত্যা করেছে।

বিশেষ অতিথি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেন, মানবতার সেবা, সমাজসেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো মানবতার বন্ধু সর্বকালের সেরা মানব মুহাম্মদ (সা.)। আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমাদের চট্টগ্রামের আবেগ। তিনি জুলুমের কারাগারে বন্দির আগ পর্যন্ত কুরআনের তাফসির মাহফিলের মাধ্যমে দাওয়াতী কাজ করেছেন।

প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক বলেন, সাহাবিরা নবী করীমকে (সা.) সর্বোচ্চ আনুগত্য করতেন। বদর যুদ্ধে নবী করীম (সা.) যুদ্ধে যাবার আগে সবার সাথে পরামর্শ করতেন। তখন সাহাবিরা সবাই তার সাথে একমত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। সাহাবারা যে আনুগত্য বিশ্বাস নিয়ে নবী করীমকে (সা.) আনুগত্য করেছেন, সেভাবেই আমাদেরকে অনুসরণ করতে হবে। তাঁর দেখানো পথই একমাত্র মুক্তির পথ হিসেবে অনুসরণ এবং আনুগত্য করতে হবে।
 
ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, মহান রবের সঙ্গে আমাদের কি সম্পর্ক সেটি আমরা নামাজের প্রতি রাকাআতে ঘোষণা দিয়ে থাকি। আমরা হলাম সাহায্যের মুখাপেক্ষী। তিনি হলেন সাহায্যদাতা। যারা মহান রবের কথা মেনে চলবে তারা দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা ভোগ করবে। আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা যাবে না।

বিশিষ্ট ওয়ায়েজ মাওলানা মহিউদ্দিন মাহবুব বলেন, আর কিছুদিন পর পবিত্র রমজান মাস। এ মাস হচ্ছে আত্মসংযমের মাস। যে মাসে কোরআনুল কারিম নাযিল করেছেন। এ মাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। যে ব্যক্তি মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এ মাসকে ইবাদত বন্দেগীর মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দিতে পারবে সে সফলকাম হবে।

মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- মুহাম্মদ জাফর সাদেক, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, মাওলানা এ.বি.এম ছিদ্দিকুল্লাহ, অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল মোমেন, এড. শামসুদ্দিন মির্জা, ইঞ্জিনিয়ার মুমিনুল হক, অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী, মাওলানা ছিদ্দিক ফারুকী, আলাউদ্দীন শিকদার, প্রফেসর মুহাম্মদ সিরাজ উদ্দৌলা, সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, এস এম লুৎফর রহমান, এড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সেলিমউল্লাহ জামান, মো. ইসহাক, ড. আবু হানিফা মোহাম্মদ নোমান, মাওলানা আব্দুল হালিম, মাওলানা মিনহাজুল ইসলাম, মাওলানা ছিদ্দিক ফারুকী, মাওলানা ছলিম উল্লাহ হাবিবি, মাওলানা মাহফুজুর রহমান মিনহাজ, মুহাদ্দিস জিয়াউল হুসাইন, মাও. ওবায়দুল্লাহ, মাও. শহীদুল্লাহ, মাও. নাঈমুল্লাহ, মাও. ইমরানুল হক সায়িদ, মাও. তৈয়ব আলী মজিদি, মাও. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, মাও. মিয়া মুহাম্মদ শরীফ হোসাইন প্রমুখ।

মাহফিলে সংগীত পরিবেশন করেন তাফহীমুল ইসলাম, পাঞ্জেরির তাহমিদুল ইসলাম ও পারাবার শিল্পীগোষ্ঠী।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৫ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।