চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষে সংষ্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী তাপস সরকার খুন হওয়ার একমাস পার হলেও পুলিশের তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই।
গত ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশ্যে গুলি করে তাপসকে খুন করা হলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ কাউকে খুনী হিসেবে চিহ্নিত করতে পারেনি।
হত্যাকাণ্ডের পর এজহারভুক্ত দশ আসামীকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাদের রিমান্ডের কোন উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ।
হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পাওয়ার পর তাপসের শরীরে বিদ্ধ হওয়া বুলেটটি কোন ধরণের পিস্তল থেকে ছোড়া হয়েছে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বুলেট পরীক্ষায় কতদিন সময় লাগতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমরা এ বিষয়ে প্রতিবেদন পাবো।
এরইমধ্যে এ ঘটনায় পাঁচ/সাত জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান মামলার এই তদন্ত কর্মকর্তা।
পুলিশ সূত্র জানায়, তাপস হত্যার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এক বুলেটেই তাসসের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি বুলেট তাপসের বুকের ডান পাশে পাঁজর ভেদ করে ভিতরে প্রবেশ করে। যা গর্ত সৃষ্টি করে এবং পিঠের দিকে এসে আটকে যায়। বুলেটটি ময়না তদন্ত করার সময় বের করে নেয় চিকিৎসকরা।
ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, তাপসের পুরো শরীরে অন্য কোন ক্ষতের চিহ্ন নেই। শুধুমাত্র ওই বুলেটের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, রক্ত শূনত্যা ও হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে তাপসের মৃত্যু হয়েছে।
বুদ্ধিজীবী দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে শাহ আমানত হলের সামনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে মারা যান মেধাবী ছাত্র তাপস। ঘটনার পর ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) ও চ্যুজ ফ্রেন্ড উইথ কেয়ার (সিএফসি) দু পক্ষই হত্যাকাণ্ডের জন্য উভয় পক্ষকে দোষারোপ করছে।
ঘটনার দিন পুলিশ ভিএক্স নিয়ন্ত্রিত শাহজালাল হলে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২৫ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে ১০ জনকে তাপসের বন্ধু হাফিজুর রহমানের দায়ের করা হত্যা মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত তাদেরকে জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠিয়ে দেয়।
হত্যা মামলায় আটককৃতরা হলেন রাশেদ হোসাইন, রুবেল দে, মোশাররফ হোসেন রায়হান, প্রদীপ চক্রবর্তী দূর্জয়, রেজাউল করিম রেজা, এনামুল হাসান অভি, আসিফ ইকবাল সাকিব, শফিকুল ইসলাম, আবু আহাদ অমি ও জাহেদ আহমেদ। তবে এখনো অধরা আছে মামলার মূল আসামী আশরাফুজ্জামান আশা।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সুমন মা্মুন বাংলানিউজকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঘটনার একমাস পরও খুনীকে আশাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আমাদের দাবি, অবিলম্বে এ মামলায় আটক এজহারভুক্ত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তাপসের হত্যাকারী ও এর সকল সহযোগীকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দফতর সম্পাদক জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, তাপস হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই। যাতে নিরাপরাধ কেউ যেন বলির পাঁঠা না হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘন্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৪