চট্টগ্রাম: খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেছেন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে খাদ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ করাসহ সকল তথ্য অনলাইন সিস্টেমে নিয়ে আসার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে আমন চাল সংগ্রহ, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বিষয়ে খাদ্য বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের সকল কার্যক্রম অনলাইন সিস্টেমে নিয়ে আসা হলে ইউনিয়ন পর্যায়ে থেকেও অনলাইনের মাধ্যমে সকল তথ্য-উপাত্ত জানতে পারবে মানুষ।
মূলত স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করা এ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সকলে প্রশংসা করেছে। কর্মসূচিটি ৫০ লাখ সহায় সম্বলহীন ও হতদরিদ্রের খাদ্য নিরাপত্তা বিধানে সচেষ্ট হয়েছে। তাই এ কর্মসূচিকে সকল বিতর্কের উর্ধ্বে রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সারাদেশের সহায়, সম্বলহীন ৫০ লাখ পরিবারকে সরকার ১০ টাকা কেজি দামে চাল বিক্রি করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ কর্মসূচি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত হয়েছে। এ কর্মসূচিকে কোনভাবে বিতর্কিত করতে দেওয়া হচ্ছে না। বির্তকিত করার অপরাধে ইতোমধ্যে ১৩০ জনের ডিলারশিপ বাতিল, ৩৭টি মামলা করা হয়েছে। ২ লাখ ১৮ হাজার কার্ড বাতিল এবং ১০ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সরকার ৩ লাখ মেট্রিক টন আমন সংগ্রহের টার্গেট নির্ধারণ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই অনুযায়ী চুক্তিও করেছে। আগামী মার্চ মাসের মধ্যে চুক্তি অনুসারে চাল সংগ্রহ করা হবে। এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিশ্বে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন চতুর্থ। ১৯৯৬ সালে এদেশে ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার গঠনের পর থেকে ২০/২২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত থাকে। আগে ৭ কোটি মানুষের জন্য বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হতো। আর বর্তমানে ১৬ কোটি মানুষের দেশ থেকে চাল রফতানি করতে আমরা সমর্থ হয়েছি। আমাদের খাদ্যে আর কোন ঘাটতি নেই।
‘ইতোমধ্যে শ্রীলংকায় চাল রফতানি করা হয়েছে, নেপালে সহযোগিতা করেছি। মধ্যপ্রাচ্যে চাল রফতানি করার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। খাদ্য রফতানিতে আমরা এখন তৃতীয় অবস্থানে রয়েছি। ’
খাদ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিতভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার ইতোমধ্যে প্রত্যেক কর্মকর্তার বেতন ভাতা ও চাকরির বয়স বাড়িয়েছে। সেই প্রেক্ষাপট থেকে সকলের উচিত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা। ভাল ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে। তাহলেই জনগণ কর্মকর্তাদের সুনাম করবে। এভাবেই দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের ভূমিকা রয়েছে।
খাদ্য বিভাগের আয়োজনে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সামসুল আরেফিন, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদির, চট্টগ্রাম সাইলো ধরিত্রী কুমার সরকার, চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলাম, খাগড়াছড়ি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আশরাফুল আলম, কক্সবাজার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম তাহমিনুল হক প্রমূখ। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলার খাদ্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
এসবি/আইএসএ/টিসি