স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদপ্তরের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. ইব্রাহিম খলিলের সই করা এক চিঠিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ৭ কর্মকর্তার পদোন্নতিসহ বোর্ডের বেশকিছু আর্থিক অনিয়ম নিয়ে অডিট আপত্তির কথা জানানো হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখিত বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা দিতে বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অনুরোধও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও খবর>>
** চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড: পদোন্নতি নিয়ে অভিযোগের ‘পাহাড়’
শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর চিঠি দিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের মোট ২০টি অনিয়ম নিয়ে অডিট আপত্তির কথা জানিয়েছে। এরমধ্যে ১৮ নম্বর আপত্তিতে বোর্ডের স্টেনোটাইপিস্ট নাসির উদ্দীনকে স্টেনোগ্রাফার পদে পদোন্নতি দেওয়ার সময় জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী দশম গ্রেড প্রদান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মো. নাসির উদ্দীন স্টেনোটাইপিস্ট পদে গ্রেড-১২ তে কর্মরত ছিলেন। ৭ বছর স্টেনোটাইপিস্ট পদে চাকরি পূর্ণ হওয়ায় তাকে স্টেনোগ্রাফার পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। এ পদের গ্রেড-১১। কিন্তু পদোন্নতি কমিটি প্রাপ্য না হওয়া সত্ত্বেও তাকে অবৈধভাবে গ্রেড-১০ প্রদান করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
‘কেনো এবং কী কারণে মো. নাসির উদ্দীনকে গ্রেড-১১ এর পরিবর্তে গ্রেড ১০ প্রদান করা হয়েছে তা জরুরি ভিত্তিতে নিরীক্ষাকে অবহিত করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা আবশ্যক। ’
চিঠির ১৯ নম্বর আপত্তিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে সেকশন অফিসার পদ শুন্য না থাকা সত্ত্বেও অর্গানোগ্রামের বাইরে গিয়ে ৬ কর্মচারীকে ওই পদে পদোন্নতি প্রদান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, বোর্ডের ৬ জন উচ্চমান সহকারী- মো. হাছান, জসিম উদ্দিন, আতিকুর রহমান, ইমাম হোসেন পাটোয়ারী, জামশেদুল আলম এবং কুতুব উদ্দিন হাছান নূরীকে নতুনভাবে সৃষ্টি করা অস্থায়ী সেকশন অফিসার পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। বোর্ড চেয়ারম্যানের অস্থায়ী পদ সৃষ্টির ক্ষমতা না থাকলেও অস্থায়ী সেকশন অফিসার পদ সৃষ্টি করে তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
‘অতএব কেনো এবং কী কারণে অস্থায়ী পদ সৃষ্টি করে তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে তা জরুরি ভিত্তিতে নিরীক্ষাকে অবহিত করতে অনুরোধ করা যাচ্ছে। ’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল আলীম বাংলানিউজকে জানান, পদোন্নতিসহ শিক্ষাবোর্ডের বেশকিছু বিষয় নিয়ে অডিট জানতে চেয়েছে। যে বিষয়গুলো তারা জানতে চেয়েছে দ্রুত চিঠি দিয়ে সেসব বিষয় সম্পর্কে জানানো হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বোর্ড চেয়ারম্যানের নিজস্ব কিছু ক্ষমতা থাকে। অর্ডিন্যান্সই তাকে সে ক্ষমতা দিয়েছে। অর্ডিন্যান্স প্রদত্ত ক্ষমতা বলেই চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি দিয়েছেন। এসব নিয়ে প্রশ্ন তোলার কিছু নেই।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর শাহেদা ইসলাম তার মেয়াদে বোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি দেন। পছন্দের লোকজনকে সুবিধা দিতে অনিয়মের মাধ্যমে এসব পদোন্নতি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠে সেই সময়। নিয়ম না মেনে বোর্ড কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এসব পদোন্নতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০২০
এমআর/টিসি