মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) বন্দর ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল জুলফিকার আজিজ এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০১৩ সালে একটা বন্দরের জন্য স্ট্র্যাটেজিক মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়।
২০১৩ সালের প্রেক্ষাপট ও ২০১৯ সালের প্রেক্ষাপট আলাদা। তখন বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের পরিকল্পনা ছিল না। এটি পরবর্তীতে এসেছে। তাই আমরা পুরো দেশের ট্রেড ভলিয়্যুম, আমদানি-রপ্তানি এবং কী পরিমাণ পোর্টের প্রয়োজন হবে সেটার একটি স্টাডি চলমান আছে।
কর্ণফুলীর দূষণ ও নাব্যতা রক্ষা প্রসঙ্গে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ হচ্ছে। কয়েকদিন আগে সভা করেছি। চীন থেকে ভাসমান নৌকার মতো ফ্লোটিং গার্বেজ ক্লিনার আনা হবে। সাব কনট্রাক্ট দিয়ে দিচ্ছি। সদরঘাটের দিকে দুইটি, মোহনায় দুইটি রাখা হবে। যাতে নদীতে ভাসমান ময়লা না পড়ে। হারানো নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান আছে। নরমাল ড্রেজার বা কাটার সাকশন দিয়ে ড্রেজিং হচ্ছে না। গ্র্যাব দিয়ে ট্রায়াল দিয়েছি। সফলতা পেয়েছি। গ্র্যাব দিয়ে ড্রেজিংয়ের কাজ করা হবে।
অবৈধ দখল উচ্ছেদ প্রক্রিয়া চলমান
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, উচ্ছেদ অভিযান চলমান প্রক্রিয়া। কিছু দিন চলবে, আবার প্রস্তুতি নেবো। এটি চলতে থাকবে। অবৈধ দখলের ৩০ শতাংশ উচ্ছেদ করেছি। এটা প্রচুর পরিমাণ। এক ধাক্কায় ৩০ শতাংশ করেছি বলে মনে হচ্ছে ছোট। সপ্তাহব্যাপী বা মাসব্যাপী করলে মনে হতো বড় উচ্ছেদ অভিযান। আমরা প্ল্যান করে সুন্দরভাবে করেছি বলে দ্রুত করতে সক্ষম হয়েছি। অচিরেই আরেকটি ২৫-৩০ শতাংশ উচ্ছেদের কার্যক্রম হাতে নেবো। প্ল্যান-প্রোগ্রাম করছি।
২০২৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক থাকবে না
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে আমরা আছি। তাদের কাজে আমরা বাধা দিচ্ছি না। শুধু বলেছি আপনারা যে প্ল্যান করছেন করেছেন সেটি আমাদের কাছ থেকে কনফার্ম করে নেবেন। বন্দরের ট্রাক চলাচলে যাতে বিঘ্ন না হয়। চট্টগ্রামের পরিচয় বন্দরনগরী, এখানে ট্রাক আসবেই। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হওয়ার পর নিচের সড়ক যাতে সরু হয়ে না যায় সে জন্য নতুন ডিজাইন করতে বলেছি। ইতিমধ্যে আমরা লেআউট অনুমোদন করে দিয়েছিও। উনাদের কাজ স্ট্রাকচারাল ডিজাইন করে কনস্ট্রাকশন করা। যাতে বন্দরের ট্রাফিক কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো ট্রাক থাকবে না। এ কথাটি লিখে নিয়ে যান আজ। আমি থাকবো কি থাকবো না জানি না। একদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে যাওয়াতে সেটি দিয়ে গাড়ি চলে যাবে। নিচের সড়ক দিয়েও গাড়ি চলাচল করবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে বে টার্মিনালের একটা আলাদা সংযোগ সড়ক হবে। এটি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সব কনটেইনার বে টার্মিনালে চলে যাবে। সেখানে ৮ হাজার ট্রাকের জন্য টার্মিনাল থাকবে। সব ট্রাক সেই টার্মিনাল পর্যন্ত আসবে। সেখানে পণ্য খালাস হবে, পণ্য নিয়ে আবার ৬৪ জেলায় চলে যাবে। সেই ট্রাকগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে না। সেভাবে ডিজাইন করেছি, কাজ করে যাচ্ছি।
বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মো. জাফর আলম বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আমাদের কারণে দেরি হচ্ছে না। ফিজিবিলিটি স্টেজে যদি আমাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করলে বাস্তবায়নের পর্যায়ে এ সমস্যার উদ্ভব হতো না। আইএসপিএস কমপ্লায়েন্সের কারণে আমরা পোর্ট বন্ধ রাখতে পারি না। আমরা উত্তরণ ঘটিয়েছি। এখন সিডিএর দায়িত্ব যত দ্রুত বাস্তবায়ন করতে পারে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর এম শফিউল বারী, সদস্য (প্রকৌশল) ক্যাপ্টেন এম মহিদুল হাসান, পরিচালক (প্রশাসন) মো. মমিনুর রশীদ, পরিচালক (পরিবহন) মো. এনামুল করিম, সচিব মো. ওমর ফারুক, উপসচিব আজিজুল মাওলা প্রমুখ।
>> ভারতের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্টে প্রস্তুত চট্টগ্রাম বন্দর
>> মুজিব বর্ষে অপারেশনে যাবে পিসিটি
বাংলাদেশ সময়: ২২৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
এআর/টিসি