চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: দুই বছর ঝুলে থাকার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। মৌখিক পরীক্ষা শেষে তিন পদের বিপরীতে ইতোমধ্যে পাঁচজনের বিষয়ে সুপারিশ করেছে সিলেকশন বোর্ড (নিয়োগ বোর্ড)।
তবে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
গত বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এ নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি দিতে আসেন প্রভাষক পদে আবেদনকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার। তবে তার এ আবেদন সেদিন গ্রহণ না করলেও ২৪ জানুয়ারি আবেদনটি গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ।
নাজমুন নাহারের ওই আবেদনপত্রে বলা হয়, 'আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রভাষক পদে একজন আবেদনকারী। ২০১৯ সালের ১৬ মে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির আলোকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছয় সেট দরখাস্ত জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার সকল প্রকার যোগ্যতা পরিপূর্ণ থাকা সত্ত্বেও ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আমাকে কোনো ধরনের চিঠি পাঠানো হয়নি। আবেদনপত্রে আমার মোবাইল নম্বর থাকা সত্ত্বেও আমাকে সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে কোনো ধরনের ফোন কল কিংবা বার্তা পাঠানো হয়নি। যার ফলে এ নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি। তাই এ মৌখিক পরীক্ষা পুনরায় নেওয়া আবশ্যক। আমি যাতে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নিজের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে পারি, তাই এ পরীক্ষা পুনরায় নেওয়ার অনুরোধ জানাই। '
চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, নাজমুন নাহার যে আবেদনটি করেছেন, সেটা আমরা খতিয়ে দেখার পর গ্রহণ করেছি। উনি বলেছেন মৌখিক পরীক্ষার চিঠি উনি পাননি। কিন্তু আমরা খতিয়ে দেখেছি, ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত এ মৌখিক পরীক্ষার চিঠি উনার ঠিকানায় ৪ নভেম্বর ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চিঠিটি ৯ নভেম্বর আবার ফেরত আসে। তাই এখানে কর্তৃপক্ষ যে দায়ী নয়, বিষয়টি স্পষ্ট। আমরা নিয়মানুযায়ী উনার চিঠি গ্রহণ করেছি। তবে এ আবেদনের প্রেক্ষিতে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।
আবেদনকারী নাজমুন নাহার বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ উত্তরে আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। কারণ আবেদনের সময় আমাদের মোবাইল নম্বর নেওয়া হয়েছিল। কোনো কারণে এমন সমস্যা হলে উনারা আমাদের মুঠোফোনেও জানাতে পারতেন। অন্যথায় মোবাইল নম্বর নেওয়ার যুক্তি কী? ডিজিটাল সময়ে এসে উনাদের এ ধরনের অজুহাত মেনে নেওয়া যায় না। আমি যেহেতু আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি, তাই আমি উচ্চ আদালতে রিট করবো।
এর আগে ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা শেষে পাঁচজনকে সুপারিশ করে সিলেকশন বোর্ড। এ ছাড়া সিলেকশন বোর্ডে বিভাগ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ শিক্ষক না রাখা, আবেদনের সময় স্বল্পতা, আবেদন করেও মৌখিক পরীক্ষায় ডাক না পাওয়া, ভাইবা কার্ড ছাড়াই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া, উচ্চ আদালতের রুল নিষ্পত্তি না করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নসহ নানান অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২২
এমএ/টিসি