ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মিতু হত্যা: শ্বশুড়ের মামলায় পিবিআইয়ের ফাইনাল রিপোর্ট 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২২
মিতু হত্যা: শ্বশুড়ের মামলায় পিবিআইয়ের ফাইনাল রিপোর্ট 

চট্টগ্রাম: মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।  

মঙ্গরবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর ইনচার্জ পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

 

তিনি বলেন, পাচঁলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ দাখিল করা হয়েছে। আদালত আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য ধার্য করেছেন।

মিতু হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, মিতু হত্যার ঘটনায় দুইটি মামলা আছে। বাবুল আক্তারের করা মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য বলেছেন। একই ঘটনায় দুই মামলা নিয়ে আদালত পর্যবেক্ষণও দিয়েছেন। মিতুর বাবার করা মামলার ২৭৬ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন আদালতে  জমা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এই মামলায় থাকা আসামি, সাক্ষীর জবানবন্দিসহ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র বাবুল আক্তারের করা মামলাটিতে যুক্ত করার একটি আবেদনও করা হয়েছে।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় নগরের পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছিলেন। এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গ্রেফতারের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক।

মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। ২০২১ সালের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে গত ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।

আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের পর ১২ মে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার বাকি সাত আসামি হলেন- মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার সাক্কু এবং শাহজাহান মিয়া।

এর আগে গত ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে আনা হয় বাবুল আক্তারকে। ১১ মে সারাদিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। ২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে জিইসি মোড়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। এ ঘটনায় ঢাকায় অবস্থান করা মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে নিজের জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি অভিযোগ করেন। ঘটনার কয়েকদিন পরেই মামলার তদন্তে নতুন মোড় নেয়। একপর্যায়ে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তার শ্বশুর।

পাঁচলাইশ থানা পুলিশের পর চট্টগ্রামের ডিবি পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে। তারা প্রায় তিন বছর তদন্ত করেও অভিযোগপত্র দিতে ব্যর্থ হয়। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলা তদন্তের ভার পায় পিবিআই। মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তার প্রথমে ঢাকার মেরাদিয়ায় শ্বশুরবাড়িতে উঠেছিলেন। ২০১৬ সালের ২৪ জুন বাবুল আক্তারকে ঢাকার ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে এনে প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০২২
এমআই/টিসি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।