চট্টগ্রাম: হালিশহর সিজিপিওয়াই এলাকায় রেলওয়ের কবরস্থান, মসজিদ, শতবর্ষী মাজার ও জলাশয় রক্ষার দাবিতে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং এলাকাবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বন্দর সংলগ্ন হালিশহর রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমির সামনে এ মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হালিশহর সিজিপিওয়াই এলাকায় রেলওয়ের ২১ দশমিক ২৯ একর জমি বেসরকারি বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান সাইফ লজিস্টিকস এলায়েন্সকে ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০২২ সালের ১৪ জানুয়ারি সিসিবিএল জমিটি সাইফ লজিস্টিকস এলায়েন্সের কাছে হস্তান্তর করে। পরে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে এনবিআর প্রতিষ্ঠানটির অফডক লাইসেন্স বাতিল করলেও কবরস্থান ও মসজিদের পাশে কাজ শুরু হওয়ায় আতঙ্ক ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
তারা জানান, জমি লিজের পর থেকেই রেলকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও জানিয়েছিল কবরস্থান ও মসজিদে কোনো স্থাপনা হবে না এবং এগুলো সংরক্ষণ করা হবে। এমনকি চলতি বছরের ২১ আগস্ট রেল সচিব কবরস্থান পরিদর্শন করে সংরক্ষণের আশ্বাস দেন। কিন্তু লিখিত নির্দেশনা না আসায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কবরস্থান, মসজিদ, শতবর্ষী মাজার ও সোবহান স্মৃতি মিলনায়তন রক্ষার দাবিতে কনটেইনার টার্মিনালের ইজারা বাতিল করতে হবে। নতুবা সিজিপিওয়াইসহ দেশের অন্যান্য রেল অফিসে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধান ইয়ার্ড মাস্টার মো. আব্দুল মালেক, বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. হোসেন সহীদ, সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগের সভাপতি মো. আজিম উদ্দিন, বাংলাদেশ রেলশ্রমিক দলের সভাপতি মো. ছাবের হোসেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লীগের কার্যকরী সভাপতি মো. মুহিদ উল্লাহ ও রেলশ্রমিক দলের উপদেষ্টা মো. শামসুল আলম।
রেলের অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান কর্মকর্তারা জানান, ১৯৯৫ সালে এক রেলওয়ে কর্মচারীর মৃত্যুতে তাকে চট্টগ্রাম বন্দর কবরস্থানে দাফন করতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এরপর থেকেই বর্তমান কবরস্থানে দাফন শুরু হয়, যা ধীরে ধীরে পরিত্যক্ত জলাভূমি থেকে কবরস্থানে রূপান্তরিত হয়।
উল্লেখ্য, সিজিপিওয়াই দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেল আয়কেন্দ্র। এখানে ট্রাফিক, টিএক্সআর, যান্ত্রিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, নিরাপত্তা, হাসপাতাল, স্কুল ও রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমিসহ বিভিন্ন ট্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রায় এক হাজার পরিবারের বসবাস। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের শত শত পরিবারও যুগ যুগ ধরে এখানে বসবাস করছে।
বিই/পিডি/টিসি