ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

দুর্গাপূজায় কলকাতাকে পাল্লা দিচ্ছে উত্তরবঙ্গ

শিলিগুড়ি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১২
দুর্গাপূজায় কলকাতাকে পাল্লা দিচ্ছে উত্তরবঙ্গ

শিলিগুড়ি: দুর্গাপূজা আয়োজনে এবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে চলছে রীতিমত প্রতিযোগিতা। আয়োজনের আড়ম্বরে কলকাতাকে পাল্লা দিচ্ছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা শহরের সার্বজনীন পূজা কমিটিগুলো।



মঙ্গলবার থেকে অষ্টাদশভুজা দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার শহরের বাইশগুড়ি এলাকায়। পূজার আয়োজন হয়েছে মানবকল্যাণ সংঘাশ্রমের মন্দিরে । ১৯৯৬ সাল থেকে মহালয়ার পর দিন এ পূজা শুরু হয়। এতে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের মাঝে উপহার বিতরণ করেন স্থানীয় জেলাশাসক মোহন গাঁন্ধী।

এ জেলারই সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সামাজিক কর্মসূচি নিয়েছেন দিনহাটা থানাপাড়া দুর্গাপূজা কমিটি। এতে দুই শতাধিক দুঃস্থ মানুষের মাঝে বস্ত্র এবং হাসপাতাল ও জেলে ফল বিতরণ করা হয়।

জলপাইগুড়ি জেলার রায়কতপাড়ার বিশাল মণ্ডপে ঢুকে চমকেও যেতে পারেন দর্শনার্থীরা। এখানে ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয়ে প্রায় পাঁচ ইঞ্চির প্রতিমা! যা বানিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অর্ঘতনু দে। কাঠি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমার অস্ত্রগুলো।

সুহৃদ সংঘের এবার ৫০ বছর পূর্তি। সুবর্ণজয়ন্তীর থিম হল ‘‘ঐতিহ্য আর শিল্পের মেলবন্ধন’’। মণ্ডপ সজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে যামিনী রায়ের আঁকা পটচিত্র। সাবেক ধাঁচের প্রতিমা।

আদরপাড়ার পূজা মণ্ডপে উদ্যোক্তারা গ্রাম বাংলাকেই থিম হিসাবে বেছে নিয়েছেন। সেই থিম ফুটিয়ে তুলতে গ্রামের আদলে ঘরবাড়ি, তুলসিমঞ্চ, কলা বাগানও রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ধান খেত।

মালদার রতুয়ার দেবীপুর তের রশিয়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবার পার করছে ১৭৫ বছর। ফুলহার নদী সংলগ্ন এলাকার এ পূজা হয় স্থায়ী মন্দিরে। দর্শনীয় প্রতিমা, সঙ্গে থাকে মানানসই আলোকসজ্জা। পূজা কমিটি খরচ বাঁচিয়ে ২৫০ দু:স্থের মাঝে বিতরণ করেছে নতুন কাপড়।

জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের দক্ষিণী যুগদর্শী ক্লাবের পূজা এবার ২৬ বছর পার করবে। এবার এতে দেখা মিলবে নজরকাড়া সব দৃশ্য। মন্ডপে দেখা যাবে ব্যামাখাপার সাধনায় সিদ্ধিলাভের দৃশ্য। পূজার মণ্ডপে লাইট শো-র মাধ্যমে সেটাই তুলে ধরা হবে চাঁচলের হাসপাতালপাড়া নবীন সংঘের পূজায়।

এ বছর ৫০ বছর পার করছে সামসি রেলস্টেশন সর্বজনীন দুর্গোৎসব। পূজার আয়োজন স্থায়ী মন্দিরে। ৫০ বছর বলে মন্দিরের সামনে তৈরি হচ্ছে মন্দিরের আদলে বিরাট মণ্ডপ। ১৭৬০ সালে আলিবর্দি খাঁ-র আমলে স্থানীয় ইজারাদার ভোদন রায় চৌধুরী পুজো শুরু করেছিলেন।

২০০৭ সালে পারিবারিক এ পূজা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর এগিয়ে আসেন এলাকার মহিলারা। দেবীর মাথার উপরে শিবগঙ্গা, দু’পাশে দুই পরী আর কলাবউ রাখা কার্তিকের পাশে। দর্শনীয় প্রতিমা।

২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একই রীতি মেনে পূজা হয় সামসি দুর্গাতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসবে।

ডাকের সাজে প্রতিমা একচালায়। হয় পাঠা বলিও। ১৩০ বছর ধরে একই রীতি মেনে পূজা হয় রতুয়ার আড়াইডাঙ্গা সর্বজনীনের পূজায়। এক সময় পূজা শুরু করেন এলাকায় কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামী।

আলিপুরদুয়ার শহরের পূজা মণ্ডপে পুরুলিয়ার গ্রাম্য পরিবেশ ও সংস্কৃতি দেখতে পাবেন দর্শনার্থীরা। দুই নম্বর ওয়ার্ডের রুপায়ন সংঘের পূজাতে লালমাটি দেশের ছোঁয়া নজর কাড়তে চান  আয়োজকরা।

এ বার পাঞ্জাবের স্বর্ণমন্দিরের আদলে মণ্ডপ করছে আলিপুরদুয়ার জংশন শিব বাড়ি পূজা কমিটি। শিববাড়ির পূজা এ বার ৫৭ বছরে পড়ল। এ বারের পূজাতে দশভূজার ভৈরবী মুর্তিতে পূজা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১২
আরডি/এআই/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।