বাংলাদেশি এক কিশোরীকে পাচারের অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেশটির দুই নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটার বাসিন্দা অমল কৃষ্ণ মণ্ডল এবং পেট্রাপোলের জয়ন্তীপুরের বাসিন্দা বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবসায়ী আমির আলি শেখ।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এনআইএ জানিয়েছে, কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি ওই নাবালিকাকে অবৈধভাবে ভারতে আনা হয়। পরে তাকে জোর করে দেহব্যবসায় নামতে বাধ্য করা হয়।
এর আগে শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর গাইঘাটা ও পেট্রাপোলে একযোগে অভিযান চালায় এনআইএ। অমল কৃষ্ণ মণ্ডল ও আমির আলি শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ভারতীয় ও বাংলাদেশি মুদ্রা এবং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করা হয়। পরে তাদের পেট্রাপোল থানায় নিয়ে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মানব পাচারের তথ্য উঠে আসে। নয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেরা শেষে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তদন্তে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে ভারতের ওডিশা রাজ্যের ভুবনেশ্বর থেকে বাংলাদেশি ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে আসে, ভুক্তভোগীকে প্রথমে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে বনগাঁয় আনা হয়, এরপর কলকাতা হয়ে ওডিশার কটকে স্থানান্তর করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে ভুক্তভোগী জানিয়েছে, পাচারচক্রের সঙ্গে বাংলাদেশে বসবাসকারী এক দম্পতির যোগসাজশ রয়েছে। মামলার শুনানিকালে অনলাইন আর্থিক লেনদেনের সূত্র ধরে এনআইএ অমল ও আমিরের সম্পৃক্ততার তথ্য পায়।
রোববার দুজনকে স্থানীয় আদালতে তোলা হলে আদালত তাদের ট্রানজিট রিমান্ডে ওডিশায় নেওয়ার অনুমতি দেন। তবে অভিযুক্তদের পরিবার দাবি করেছে, তারা এসব অপরাধে জড়িত নন। আমির আলির চাচা সাহেব আলি বলেন, আমার ভাতিজা মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবসা করে। এর বাইরে কিছু জানি না। অমলের স্ত্রী মিনি মণ্ডল জানান, স্বামী মাঠে চাষ করত ও জামাকাপড়ের ব্যবসা করত। হঠাৎ করেই পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গেছে।
এনআইএ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক গ্রেপ্তার এবং গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দের মাধ্যমে বাংলাদেশি নারী ও নাবালিকাদের ভারতে পাচারচক্র ধ্বংসের পথে বড় অগ্রগতি হয়েছে।
ভিএস/এমজে