কলকাতা: আনন্দমেলায় ছোটদের জন্য মহাভারত লিখছিলেন কালজয়ী কথা সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। তা শেষ হওয়ার আগেই সোমবার শেষ রাতে মৃত্যু হয় তার।
এই মৃত্যুতে মুষড়ে পড়া সুনীলের স্ত্রী স্বাতীর কথায় তাই স্বামী হারানোর বেদনার পাশাপাশি ওই শেষ করতে না পারার আক্ষেপও ফুটে উঠলো।
মঙ্গলবার সকালে পারিজাত বাসভবনে তার মুখোমুখি হয় বাংলানিউজ।
বিদায়বেলার কথা স্মরণ করে শোকাহত স্বাতী বললেন, “আমার সঙ্গে খুব ইয়ারকি করতেন। মজার মানুষ ছিলেন। আমি রাতে খেতে দিলাম, বলল, খেতে পারবো না। আমি জোর করলাম। আমায় বলল, তুমি আমার উপর রাগ করছো। এটাই ওর শেষ কথা। আমার একটাই আক্ষেপ, ও ছোটদের জন্য আনন্দমেলায় মহাভারত লিখছিল। ওটা শেষ করত পারলো না। ”
আক্ষেপ আর স্মৃতিচারণ পর্বটাকে আর একটু যেন ছড়িয়ে দিতে চাইলেন স্বাতী গাঙ্গুলি।
বললেন, “বেশ কয়েকদিন ধরে শারীরিকভাবে উনি দুর্বল হয়ে গেছিলেন। দাঁতের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। রাত ১০টায় শুয়ে পড়লেন গল্প করে। আবার ২টায় উঠলেন। কথা বলতে বলতে বাথরুমে গেলেন। ওখানে পড়ে গেলেন। রাত আড়াইটে নাগাদ ডাক্তার এলেন, তখন সব শেষ। ”
প্রবীণ চিত্র তারকা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বাংলানিউজকে টেলিফোনে বলেন, “আমি কিছু বলতে পারছি না। কলেজে ও আমার এক ক্লাস উপরে পড়ত। আমার বন্ধু ছিল। খুব শূন্যতা তৈরি হলো। ভীষণ মর্মান্তিক। আমি ওর বাসভবনে গিয়ে মরদেহের সামনে দাঁড়াতে পারবো না। ”
সাহিত্যিক সমরেশ মুজমদার বলেন, “এর চেয়ে খারাপ খবর কিছু হতে পারে না। কাল সন্ধ্যায় একবার ফোন করেছিলাম অষ্টমী পূজার অভিনন্দন জানাতে। সুইচ অফ ছিল। মনে একটা অস্বস্তি হচ্ছিল। তারপর সব শেষ। মনে পড়ছে, আমি সাহিত্য একাডেমী সম্মান পেলাম, উনি তখনও পাননি। কিন্তু উনি ফোন করে আমায় প্রথম অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১২
জেডএম/