ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মামলার জট

বিচারে বিলম্ব মানেই বিচার না-পাওয়া: প্রণব

কলকাতা সংবাদদাতা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৩
বিচারে বিলম্ব মানেই বিচার না-পাওয়া: প্রণব

কলকাতা: ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেছেন, দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। কারণ, সুবিচার পেতে বিলম্ব হওয়ার অর্থই হল সুবিচার না-পাওয়া।



কলকাতা উচ্চ আদালতে বিচারপতির অনেকগুলো পদ শূন্য থাকায় এবং বিভিন্ন আদালতে মামলা জমে জমে পাহাড় হয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করার সময় তিনি এ কথা বলেন।

এই অবস্থার কারণে একদিকে যেমন মামলার নিষ্পত্তি দ্রুত হচ্ছে না তেমনি অন্যদিকে মামলার খরচ বেড়ে চলছে। বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন প্রণব।

রোববার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা উচ্চ আদালতের সার্ধশতবর্ষ পূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রণব বলেন, “বিচারক ও বিচারপতির পদ খালি পড়ে থাকা এবং মামলার পর মামলা  জমে যাওয়াটা শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা নয়। সামগ্রিক ভাবে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাতেই এই সমস্যা আছে। ”

ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, “ভারতের বিচার ব্যবস্থা এই একটি ক্ষেত্রে পিছিয়ে। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ করা যাচ্ছে না। সুবিচার পেতে যারা আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন, মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি না-হওয়ায় সুবিচার পাওয়াটা তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। ”

বিচারকর্তার অভাবে কী ভাবে মামলা বিলম্বিত হচ্ছে, তার কারণ তুলে ধরতে কলকাতা উচ্চ আদালতের কথাই টেনে আনেন রাষ্ট্রপতি। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, উচ্চ আদালতে ৫৮টি বিচারপতি-পদ রয়েছে। কিন্তু আছেন ৪১ জন বিচারপতি। ২০১১-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত উচ্চ আদালতে তিন লক্ষ ৪৭ হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। এর মধ্যে দেওয়ানি মামলা তিন লাখের বেশি। কলকাতা হাইকোর্টের অধীন আদালতগুলিতে প্রায় ২৬ লাখ মামলা ঝুলে রয়েছে, যার মধ্যে ২১ লক্ষেরও বেশি ফৌজদারি মামলা।

মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আদালতের খালি পদ দ্রুত পূরণ করা দরকার বলে মন্তব্য করে প্রণব বলেন, “বিচারপতি মনোনয়ন এবং তাদের নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়াটি যাতে সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে এবং সুপ্রতিষ্ঠিত ও স্বচ্ছ নীতির ভিত্তিতে করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ”

প্রণবের বিশ্বাস, মামলার জট কমাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার দু’পক্ষই কলকাতা হাইকোর্টকে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, “আমি জানি, এই কাজে প্রয়োজনীয় অর্থ পেতে যাতে সমস্যা না-হয়, কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েই সেটা নিশ্চিত করবে। বিশেষ করে এটা যেহেতু নাগরিকদের সুবিচার দেওয়ার বিষয়, তাই কেন্দ্র ও রাজ্য দু’পক্ষই সাহায্য করবে বলে আমার বিশ্বাস। ”

এ দিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উচ্চ আদালতের আইনজীবী সমিতি, বার লাইব্রেরি ক্লাব এবং ইনকর্পোরেটেড ল সোসাইটি। অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণ, সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর, উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র, অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র, রাজ্যের আইন ও বিচার প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।