ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কিষেণজির চিকিত্‍সক গ্রেফতার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩
কিষেণজির চিকিত্‍সক গ্রেফতার

কলকাতা: কেএলএম নেতা কিষেণজির চিকিত্‍সক সমীর বিশ্বাসকে আসানসোল থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তিনি একজন মাওবাদী নেতাও।



বুধবার রাতে আসানসোলের মহিশীলা এলাকায় তার দাদার বাড়ি থেকে সমীর বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ।

২০১০ সালে আসানসোল দক্ষিণ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। ওই সময় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর মাওবাদী নথি উদ্ধার করে পুলিশ।

সেই থেকেই লাপাত্তা ছিলেন তিনি। সমীর বিশ্বাসকে আসানসোল আদালতে তোলা হয়েছে।
ডাক্তার হিসেবে তাঁর সুনাম ছিল এলাকায়। মাওবাদী নেতা-কর্মীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগের অভিযোগে চিকিৎসক সমীর বিশ্বাসের গ্রেফতার হওয়ার খবর শুনে চমকে গিয়েছেন আসানসোলের অনেকেই।

তাঁকে দেখতে এ দিন অনেকে আসানসোল আদালতে যান। পুলিশি ঘেরাটোপে অবশ্য ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি কারও।
প্রায় তিন বছর তাঁকে দেখা যায়নি এলাকায়। বারাবনির পাঁচগাছিয়ার বাসিন্দারা শেষ বার সমীরবাবুকে দেখেছিলেন ২০১০-এর এপ্রিলে। আসানসোলের মহিশীলায় পৈত্রিক বাড়ি থাকলেও তিনি থাকতেন পাঁচগাছিয়ায় বারমুন্ডিয়া কোলিয়ারি লাগোয়া একটি খনি আবাসনে।

ইসিএলের কাল্লা সেন্ট্রাল হাসপাতালে কর্মরত থাকাকালীন অবসর নেন ২০০৬ সালে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও চিকিৎসা করতেন তিনি।

পাঁচগাছিয়ার বাসিন্দারা জানান, রাতবিরেতে ঘুম থেকে তুলেও তাঁকে দিয়ে চিকিৎসা করানো যেত। এই অঞ্চলে বহু গরিব পরিবারের বাস। এলাকার বাসিন্দা বিশ্বকর্মা নুনিয়া বলেন, “আমরা চিকিৎসা করিয়ে কখনও তাঁকে টাকা দিইনি।

উল্টে, ওষুধপত্র ও খাবার কেনার জন্য তাঁর থেকে পয়সা নিতাম। ” আর এক জন প্রদীপ বাউড়ির কথায়, “প্রতি দিন একটি সাইকেলে বস্তি এলাকায় ঘুরতেন সমীরবাবু। বস্তি থেকে শিশুদের তুলে নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে খাওয়াতেন। জামাকাপড়, বইপত্রও দিতেন। ”

আসানসোলে নানা সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন অকৃতদার সমীরবাবু। এমনই এক সংগঠনের কর্তা তথা চিকিৎসক মুক্তেশ ঘোষ জানান, প্রায় ২৫ বছর তাঁদের সহযোগী ছিলেন সমীরবাবু। তাঁর দাবি, সমীরবাবু ছাত্রাবস্থায় নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন।

তবে কখনওই প্রথম সারিতে এসে কাজকর্ম করেননি। মুক্তেশবাবু বলেন, “গত কয়েক বছর আমাদের কোনও যোগাযোগ ছিল না। খবরটা শুনেই আদালতে দেখা করতে এসেছি। ”

কর্মস্থলে অবশ্য কখনও কোনও সংগঠনের সঙ্গে জড়াননি সমীরবাবু। অফিসার হওয়ার সুবাদে শ্রমিক সংগঠনে যোগ দিতে না পারলেও কর্মকর্তাদের সংগঠনে নাম লেখাতেই পারতেন।

সহকর্মীরা সেই অনুরোধও করেছিলেন। কিন্তু কখনও ইসিএল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের খাতায় সমীরবাবু নাম লেখাননি বলে জানান সংগঠনের সম্পাদক দামোদর বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শুধু বলেন, “ইসিএলের কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মীদের মধ্যে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। ”

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩
সম্পাদনা: সুকুমার সরকার, আউটপুট এডিটর কো-অর্ডিনেশন এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।