আগরতলা (ত্রিপুরা): লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে দেশজুড়ে সংকটে পড়েছে সিপিএম (কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদী)। নির্বাচনের যতই এগিয়ে যাচ্ছে সেভাবে দেশের রাজনৈতিক উত্তাপও বাড়ছে।
নির্বাচনে বেশি আসন নিজেদের পক্ষে আনতে ভোটে অংশ নেওয়া সিপিএম এবং কংগ্রেসের নেতাকর্মীরাই ছুটছেন রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। চিন্তা শুধু একটাই নিজেদের প্রার্থীকে জয়ী করা।
কিন্তু কীভাবে? এক দিক হলে অন্যদিক হয় না। দেশে এখন রমরমা জোট রাজনীতি। একদল বা একক ভাবে কিছু করা প্রশ্নে ভরসা করতে না পেরে সবাই শরিকদের ওপর নির্ভর করছে। তবে শরিকদের মন রক্ষা করে চলতে গিয়ে মাঝে মাঝে অপ্রত্যাশিত সমীকরণের মুখোমুখিও পড়তে হচ্ছে।
এনিয়ে দেশজুড়ে নতুন সংকটে পড়ছে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)।
গত কয়দিন ধরে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেনি। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ সব জায়গাতেই একই চিত্র।
সিপিএমের সঙ্গে বেশ কয়েক দশক ধরে জড়িত তামিলনাড়ুর ডি এম কে নেতা করুণানিধি। তার সংশ্লিষ্টতায় সাংগঠনিক শক্তির চেয়ে বেশি আসনে তামিলনাড়ুতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে সিপিএম।
বেশ কয়েকবার ভালো ফলাফলও করেছে দলটি। কিন্তু গত পাঁচ বছর আগে সেখানে দক্ষিণের আম্মার সঙ্গে হাত মেলায় প্রকাশ কারাট। এবার
সিপিএমকে বাদ দিয়ে জোট ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন জয়ললিতা।
ওই রাজ্যে সিপিএম এখন মহা সংকটে! জোটহীন, বন্ধুহীন হয়ে একই অবস্থা কেরালাতেও। সেখানে সিপিএম নেতৃত্বাধীন এল ডি এফ জোট ছেড়ে বেড়িয়ে গেছে বহু পুরানো সাথী আরএসপি।
কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে আলাদা প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে দলটি।
পশ্চিমবঙ্গে গত পাঁচ বছরে শুধুই সিপিএম পিছিয়েছে। এর পেছনে হাঁটার প্রক্রিয়া এখনো রয়েছে। সম্প্রতি দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন দাপুটে কৃষক নেতা রেজ্জাক মোল্লা। পশ্চিমবঙ্গের বহু জেলায় এখন পার্টি ধুঁকছে।
বিহারে নিতিশ কুমারেরে জেডি (ইউ) সিপিএমকে কোনো আসন ছাড়তে রাজি হয় নি। সমাজবাদী পার্টি সিপিএমের ওপর রুষ্ট হয়ে পশ্চিমবঙ্গের চার আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
এক সময়ের কিছুটা শক্ত ঘাঁটি অন্ধ্রপ্রদেশেও এখন দুই ভাগে বিভক্ত। ফলে সেখানেও পার্টিতে ঘটেছে বিভাজন।
ফলে ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত যে সিপিএম জাতীয় রাজনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হয়েছিল এখন দলটি রক্তশূন্যতায় ভুগছে! উঠে দাঁড়ানোর জন্য লড়ছে। দেশের প্রায় সবকটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে তাদের অবস্থাই ক্রমশ ম্রিয়মাণ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৪