শান্তিনিকেতন: রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত শান্তিনিকেতনে প্রতিবারের মত এবারও বাংলাদেশি ও ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আয়োজন করা হলো।
একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শান্তিনিকেতনের প্রাণকেন্দ্র কাঁচ-মন্দির সংলগ্ন পুরনো মেলার মাঠ প্রাঙ্গণে ভাষা শহীদদের স্মরণে একটি অস্থায়ী শহীদমিনার নির্মাণ করা হয়।
সকালের আলস্য ভেঙ্গে পূর্ব-নির্ধারিত সময় অনুযায়ী একে একে ছাত্র-কর্মকর্তারা অস্থায়ী শহীদ মিনারে উপস্থিত হন। অতপর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের পুষ্পস্তবক অর্পনের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এর আগে রাত জেগে শিক্ষার্থীরা শান্তিনিকেতনের রাস্তা আল্পনায় রাঙিয়ে তোলে। মূল অনুষ্ঠানে গান ও কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে ভাষাশহীদদেরে স্মরণ করা হয়। অনুষ্ঠান আয়োজনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্বক সহায়তা করা হয়।
দেশ-জাতি-বর্ণ ও গোত্রের ভেদা-ভেদ ভুলে বাঙালি-অবাঙালি সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অস্থায়ী শহীদমিনার প্রাঙ্গণ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। সম্মিলিত কণ্ঠে গাওয়া হয়, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি ...’।
বাংলাদেশ থেকে এতদূরে এসে প্রথমবারের মত মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া পাপ্পু জোসেফ রোজারিও, পার্থ সরকার ও বিপ্লব সরকার জানান, শান্তিনিকেতনের মাটিতে এই দিনটি যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করতে পেরে তারা গর্বিত।
স্থানীয়দের মধ্য থেকে পাঠভবনের সাবেক শিক্ষার্থী অভিনন্দন সিনহা বললেন, ১৯৫২ সালের এই দিনটিতে মায়ের ভাষায় মতপ্রকাশের অধিকায় আদায় করে নেয়া হয়েছিল। তাই সকল ভাষার স্বাধীনতার প্রতি আমাদের এই শ্রদ্ধানিবেদন।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পৃথিবীতে এখনো ছোট-বড় অনেক ভাষা আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে। এই দিনটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
নাবিল জাহাঙ্গীর: অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ, ইংরেজি বিভাগ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনিকেতন, ভারত, [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৫