ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মাওবাদী কিষেণজিকে হত্যা করেছিল মমতা সরকার!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৫
মাওবাদী  কিষেণজিকে হত্যা করেছিল মমতা সরকার!

কলকাতা: ভারতের প্রথম সারির মাওবাদী নেতা কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার হত্যা করেছে বলে শুক্রবার (১৭ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গল মহলে প্রকাশ্য জনসভায় দাবি করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং দলের যুব সভাপতি তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিষেণজির মৃত্যুর চার বছর পর পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃনমূল কংগ্রেসের সাংসদের এই মন্তব্য সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।



ভারতের লোকসভার সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার বছরের সরকার। চার বছরে জঙ্গলমহলে একজনই মারা গিয়েছে। তিনি মাওবাদী নায়ক কিষেণজি।

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরেই, পশ্চিম মেদিনীপুরের বুড়িশোলের জঙ্গলে যৌথবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় শীর্ষ মাওবাদী নেতা কিষেণজির।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার বা তৃণমূল কংগ্রেস দল এর আগে কখনই এর কৃতিত্ব স্বীকার করেননি।

পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী হামলার ঘটনা প্রথম সামনে আসে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার মধ্যে দিয়ে। এরপর পশ্চিমবঙ্গে চূড়ান্ত তৎপরতা শুরু হয় মাওবাদীদের।

পশ্চিমবঙ্গের তথা ভারতের রাজনীতি নিয়ে খবর যারা খবর রাখেন তারা সকলেই জানেন জ্ঞানেশ্বরি একপ্রেসে ২০১০ সালে ১৫০ জন মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান। তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ঘটনার জন্য মাওবাদীদের দায়ী করলেও সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,মাওবাদীদের কোনো অস্তিত্ব পশ্চিমবঙ্গে নেই।

এই প্রসঙ্গে মনে করা যেতে পারে বাম আমলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চেয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন কোটেশ্বর রাও ওরফে কিষেণজি।

কিষেণজির হত্যার পর ভারতের বিভিন্ন সংগঠন সন্দেহ প্রকাশ করেছিল,চক্রান্ত করে ডেকে নিয়ে খুন করে হয় এই মাওবাদী নেতাকে। যদিও সমস্ত সরকারি স্তর থেকে এই সন্দেহ নস্যাৎ করা হয়েছিল। তবে কিষেণজির পরিবারের তরফেও দাবি করা হয়েছিল গুলিবিনিময়ে নয়, চক্রান্ত করে হত্যা করা হয়েছিল এই মাওবাদী নেতাকে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে সময় কিষেণজি যৌথ বাহিনীর গুলিতে মারা যান সে সময় তিনি দিল্লী ছিলেন। তাই তার পক্ষে এই বিষয়ে জানা সম্ভব নয়। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিগত দিনে করা দাবির পুরোপুরি বিপরীত।

সাবেক বাম সরকার তাদের আমলে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পিছনেও মাওবাদীদের হাত আছে বলে দাবি করে। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন নিরীহ গ্রামবাসীর প্রাণ যায়। বামফ্রন্টের তরফে করা হয় গ্রামবাসীদের সামনে রেখে পিছন থেকে পুলিশকে আক্রমণ করেছিল মাওবাদীরা।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। আগামী সময়ে এই মন্তব্য পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের রাজনীতিতে আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৮,২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।