ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

‘হাজার সমস্যা হলেও চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে’

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
‘হাজার সমস্যা হলেও চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে’

৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট নিয়ে বিদেশি পর্যটকরা যখন গোটা ভারতে সমস্যায় জর্জরিত, ঠিক তখনই নতুন নজির সৃষ্টি করেছে কলকাতার  ড. সরোজ বসু বোস ক্যান্সার রিসার্চ ইনিস্টিটিউট (ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতাল)।

কলকাতা: ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট নিয়ে বিদেশি পর্যটকরা যখন গোটা ভারতে সমস্যায় জর্জরিত, ঠিক তখনই নতুন নজির সৃষ্টি করেছে কলকাতার  ড. সরোজ বসু বোস ক্যান্সার রিসার্চ ইনিস্টিটিউট (ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতাল)।

অন্য হাসপাতালগুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে সেখানে।

ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়মিত আসেন বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বহু মানুষ। বর্তমানেও সেখানে চিকিৎসার জন্য অনেক রোগী ভর্তি আছেন।

কারেন্সি ভাঙানো মানেই ৫০০ ও হাজার রুপির নোট। তাই অনেক রোগীর পরিবারের কাছেই এ দু’ধরনের রুপির নোট রয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকাল দশটায় ব্যাংক খুললেও সকাল ৭টা থেকেই প্রতিটি ব্যাঙ্কের সামনে নোট পরিবর্তনের লম্বা লাইন পড়ে যায়। একদিনে সমস্ত বাতিল নোট বদলানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এর ফলে সমস্যায় পড়ে যান রোগীর আত্মীয়রা। অনেকেই ব্যাঙ্কগুলোর সামনে লম্বা লাইন দেখে ফিরে আসেন।

এ অবস্থায় রোগীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা রোগীদের কাছে যতোটুকু অর্থ আছে, ততোটুকু নিয়েই চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশি রোগীদের স্বজনেরা বাংলানিউজকে জানান, নতুন রুপি হাতে না আসায় যার পক্ষে যতোটুকু দেওয়া সম্ভব, তারা ততোটুকুই দিচ্ছেন। যারা দিতে পারছেন না তাদের চিকিৎসাও চলছে আগের মতোই।

হাসপাতালের পক্ষে বলা হয়েছে, বাকি অর্থের জন্য চিকিৎসা থেমে থাকবে না। যারা বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বা শুক্রবার (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ফিরে যাচ্ছেন, তারা পরেরবার চিকিৎসা করাতে এসে বকেয়া বিল মেটাতে পারবেন।

নোট ভাঙানোর সমস্যার ফলে কলকাতার একাধিক হাসপাতালে বিভিন্ন দুর্ভোগে পড়ছেন বাংলাদেশের মানুষেরা। ঠিক সে সময়ে ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালের এ পদক্ষেপকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সবাই।

ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিন্টেনডেন্ট ডা. পার্থ হালদার বাংলানিউজকে জানান, চিকিৎসাসেবা নোটের সমস্যার কারণে বন্ধ করা হয়নি, আর হবেও না। যাদের কাছে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট আছে, তারা পরেও বিল মেটাতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন,  ‘আর পাঁচটা হাসপাতাল কি করছে, সে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। ক্যান্সারের মতো রোগের চিকিৎসা কোনোভাবেই বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। হাজার সমস্যা হলেও চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। তবে অন্য হাসপাতালগুলোরও মনে রাখা দরকার, এই রোগীরা বিদেশি’।
‘মানবিকতার দিক থেকেও এ  সমস্যায় তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। কেউতো টাকা না দিয়ে যাবেন না। দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় তারা কি করতে পারেন?’

নোট নিয়ে জর্জরিত তাদের পাশে এভাবে দাঁড়ানোয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রোগীদের স্বজনেরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৬
ভিএস/এএসআর

**
বাতিল নোট বদলাতে ভারতের ব্যাংকগুলোতে দীর্ঘ লাইন
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।