ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মনমোহন এলে তিনবিঘা করিডোর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ঘোষণা

মোয়াজ্জেম হোসেন, পাটগ্রাম প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১১
মনমোহন এলে তিনবিঘা করিডোর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ঘোষণা

দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা থেকে ফিরে: বাংলাদেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এর অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বিচ্ছিন্ন লোকালয় দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ছিটমহলের ১৭ হাজার অধিবাসী।

আগামী ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের আসার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।



আসন্ন সফরে তিনি দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতার সঙ্গে বাংলাদেশের একমাত্র সংযোগ পথ তিন বিঘা করিডোরের গেট ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ঘোষণা দেবেন।

শুক্রবার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ছিটমহলে সরজমিনে গেলে হযরত আলী (৩২), আব্দুল কাদের (৪৫), লিজু হাসান (২৫), রাসেল মাহমুদ (২২), আমির আলী (৬০), মনিরা খাতুন বিউটি (২৪) ও খাদিজা বেগম (৪৫)সহ অনেকে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরে এলে তিন বিঘা করিডোর গেট ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ঘোষণা দেবেন। আমরা মুক্তি পাব। দেশের মূল ভূ-খণ্ডে আমরা ২৪ ঘণ্টা চলাচল করতে পারবো। আমাদের আর কোনো অসুবিধা হবে না। ’

তারা বলেন, ‘১৯৪৭ সাল থেকে আমরা নিজ দেশে পরবাসী জীবন কাটাচ্ছি। এখন মুক্তি চাই। ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির বাস্তবায়ন চাই। ’

দহগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক তবিবর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ দিন থেকে ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছি। আশা করছি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং ও পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্র্র্র্র্র্জীর আসন্ন বাংলাদেশ সফরের মাধ্যমে দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ছিটমহলবাসীর একমাত্র চলাচলের পথ ‘তিনবিঘা করিডোর গেট’ ২৪ ঘণ্টা চলাচলের জন্য খোলা রাখার ব্যাপারে দ্বি-পক্ষীয় সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হবে। ’

দহগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন এমপির মাধ্যমে আমাদের সমস্যাগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরা হয়েছে। আমি আশাবাদী ড. মনমোহন সিংহ বাংলাদেশ সফরের সময় তিনবিঘা করিডোর গেট ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার ব্যাপারে কার্যকরী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। ’
 
দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘২০১০ সালের ১০ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ছিটমহলবাসীর সাথে কথা বলে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন। এর মধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ ও টেলিটকের টাওয়ার স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ’
 
তিনবিঘা করিডোর মুক্তি আন্দোলনের সাবেক সভাপতি আমিনুর রহমান প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার বয়স হয়েছে ১০৪ বছর। ১৯৪৭ সাল থেকে অবরুদ্ধ জীবনের মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছি। ’৭৪-এ ইন্দিরা-মুজিব ছিটমহল বিনিময় চুক্তি হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জীবিত না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে এ দাবি প্রতি কেউ কর্ণপাত করেনি। বর্তমানে ইন্দিরা-মুজিবের দল ক্ষমতায় আছে। আমার মৃত্যুর আগে তিনবিঘা করিডোরের গেট ২৪ ঘণ্টা খোলা দেখতে চাই। ’

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোখলেছার রহমান সরকার বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হচ্ছে। ছিটমহলের সমস্যাগুলো সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনে তুলে ধরেছি। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।