কলকাতা: পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনায় কলকাতা প্রেসক্লাবে উঠে এলো মহাভারত প্রসঙ্গ।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়াঁ মহাভারতের দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামীর উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘অর্জুন যখন লক্ষ্যভেদ করে দ্রৌপদীকে মা কুন্তির সামনে নিয়ে আসেন তখন মা কুন্তি কোনো কিছুই না দেখে পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দ্রৌপদীকে ভাগ করে নিতে বলেন। সেই কারণেই দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামী। রাজনৈতিক ভাবে ভাগ হয়ে গেলেও আদতে আমরা বাঙালি, তাহলে আমরা কেন পানি ভাগ করে নিতে পারবো না? প্রেসক্লাবে বসে আপনাদের মাধ্যমে দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এ বিষয়ে আবেদন করতে চাই। আমরা যদি ভাগাভাগি করে নিতে পারি, তাহলে আমাদের মধ্যে কোনো বিভেদ থাকবে না। এতে দয়া করে কোনো রাজনৈতিক রঙ দেবেন না, আমাদের অধিকারের কথা বললাম। ’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের চলচ্চিত্র’ শিরোনামে এক বিশেষ আলোচনা আয়োজন করা হয় কলকাতা প্রেসক্লাবে। এ আলোচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়াঁ এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মো. মুরাদ হাসান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিঁয়া। এছাড়া, উপস্থিত ছিলেন ভাষাবিদ পবিত্র সরকার, পরিচালক ও অভিনেতা সৃজিত মুখার্জী।
প্রধান অতিথি হিসেবে মুরাদ হাসান তার বক্তব্যে বলেন, আমি খাজা মিঁয়ার বক্তব্যের সঙ্গে একমত। সেই সঙ্গে কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সহযোগিতায় কলকাতার ঐতিহাসিক প্রেসক্লাবে এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। করে কলকাতা এ প্রেসক্লাব মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সহযোগী। এখানে বসে বক্তব্য রাখছে তা আমার কাছে গর্বের। ’
অনুষ্ঠানের পরিচালক সৃজিত মুখার্জী বলেন, ‘তৃতীয়বারের মতো যে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হচ্ছে যেখানে দেখে মনেই হয় না আলাদা করে অন্য কোনো দেশের ছবি দেখছি। আন্তর্জাতিক ভাবে বাংলাদেশ আলাদা দেশ হলেও, অন্তত পশ্চিমবাংলাবাসীর কাছে বাংলাদেশের ছবি দেখার জন্য কোনো সাবটাইটেলের প্রয়োজন হয় না। কারণ আমরা ছোটবেলা থেকেই বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়েছি। আমি একাধিকবার শুধু বাংলাদেশের জন্য চলচ্চিত্র বানানোর কথা ভাবলেও তা হয়ে ওঠেনি। তবে এবার হুমায়ুন আহমেদের গল্প নিয়ে কাজ শুরু করার একটা পরিকল্পনা করেছি। ’
ভাষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, ‘আমি ৮৪ বছর বয়স পার করেছি। এত বছরেও আমি খুব একটা চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, তবে আমি যৌবনে কিছু সিনেমা দেখেছি। আমি বেশি পরিচিত বাংলা নাটকের সঙ্গে। এখনও বাংলাদেশে গেলে সেখানকার নাটক দেখি। তবে চলচ্চিত্র না দেখলেও বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের খবর রাখি। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক উন্নত মানের সিনেমা তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মান ও গুরুত্ব পাচ্ছে, যা আমার কাছে বাঙালি হিসেবে গর্বের। ’
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান। এছাড়া সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রথম সচিব প্রেস ড. মো. মোফাকখারুল ইকবাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২১
ভিএস/এফএম