ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নিয়ে একই গান গাইছি: বাণিজ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নিয়ে একই গান গাইছি: বাণিজ্যমন্ত্রী

ঢাকা: বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমরা কথায় স্মার্ট, কিন্তু কাজে সমস্যা আছে। এখানে মনোযোগ দিতে হবে।

যে প্ল্যান করি সেগুলো যেন ঠিক ঠাক হয়। বলে চলে গেলাম, হলো না—এমন যেন না হয়।

তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন রপ্তানি করবো। আমরা যদি প্রয়োজনীয় সার্পোট দিতে পারি, এগিয়ে নিতে পারি তাহলে এটা সম্ভব। যেমন লেদারের সাইফুল ইসলাম এখানে আছেন। আমরা তিন বছর ধরে বলছি, এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ঠিক করতে হবে। লেদার আমাদের একটি সম্ভাবনাময় খাত। যতদিন ধরে বলছি, ততদিন দুই-তিন বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়ে যেত। এই ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নিয়ে তিন বছর ধরে আমরা একই গান গাইছি, অথচ হচ্ছে না। আমরা যত বলছি, তত বেশি এগোতে পারছি না।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কামার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও বিইবি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ইনডেক্স-২০২২-২০২৩’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন এসসিসিআই-এর সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের আগে দেশে থাকা চলমান বিনিয়োগকারীদের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে। তাদের ভালো দেখতে হবে। তাহলে নতুন বিনিয়োগ আসবে। তাদের ভালো না রেখে নতুন বিনিয়োগকারী খুঁজলে হবে না। তারা যদি পদে পদে সমস্যার সম্মুখীন হন; তারা ভালো কথা বলবেন না। কোনো বিদেশি বিনিয়োগ করার আগে পূর্বে থেকে থাকা বিনিয়োগকারীদের কাছে থেকে খোঁজ-খবর নেন। তারপর সেই দেশ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পুরনো বিনিয়োগকারীকে ভালো না রাখলে তারা নতুন বিনিয়োগকারীকে নিরুৎসাহিত করবে। বিনিয়োগের আকর্ষণের জন্য সবচেয়ে বড় প্রচার হলো দেশে চলমান বিনিয়োগকারীকে ভালো রাখা।

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে অভিষ্ট নির্ধারিত হয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য সম্প্রসারণ জরুরি। এ জন্য শুধু ঢাকা চট্টগ্রামে নয়, উদ্যোগ সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। সারা দেশেই কোনো না কোনো সম্ভাবনা আছে। এসএমই-এর মাধ্যমে এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। উন্নয়নের পথে এসএমই-এর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু সেই এসএমইএ-তে আমরা পিছিয়ে আছি। এখাতের উদ্যোক্তারা নানা কারণে টাকা পাচ্ছে না। অর্থনীতিতে এসএমই-এর অংশগ্রহণ অন্তত ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করতে হবে।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে আইন-কানুনের সাথে মানসিকতাও ইতিবাচক করতে হবে। যারা সরকারি চাকরি করেন তাদের সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছা ও দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে হবে। মনে রাখতে হবে জনগণের করের টাকায় আমাদের বেতন হয়। বিদেশি বিনিয়োগে ডকুমেনটেশনে তৈরি করতে ভারত, ভিয়েতনামে যেখানে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে হয়ে যায়, বাংলাদেশে সেখানে ছয় মাস লেগে যায়। প্রয়োজনীয় চিঠি বিডা থেকে পরিবেশ দপ্তরে গেলে সেখানে অনেক সময় লেগে যায়। সরকারের উপর মহলের চাপ থাকলে দুই দিনেই হয়ে যায়। সরকার যেখানে দ্রুত বিদেশি বিনিয়োগ চায়, এসব কর্মকর্তারা সেখানে সরকারের ইচ্ছা বুঝতে ব্যর্থ হন।

এসএমই ব্যবসা খাতের উন্নয়নে আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার সামির সাত্তার। তিনি বলেন, জামানত সমস্যার কারণে ছোট্ট উদ্যোক্তারা সুবিধা করতে পারছেন না। সরকার ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম গঠিত হয়েছে সেখান থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া জরুরি।

বিল্ডের চেয়ারপার্সন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির বলেন, বাংলাদেশে একটি বিশেষ শ্রেণির কর দেওয়ার জন্য ৩৯ ধরনের তথ্যের প্রয়োজন হয়। এটা কমিয়ে ১২টিতে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটা প্রমাণ করে রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া যতই জটিল হোক, এটা সহজ করা সম্ভব। সরকারের আন্তরিকতা আছে বলেও মনে হয়। আমরা আশা করি ১২ ধরনের ডকুমেন্ট থেকে বের হয়ে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ট্যাক্স দেওয়া সম্ভব হবে।

এফআইসিসিআই প্রেসিডেন্ট নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ক্ষুদ্র বিনিযোগকারীরা বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময়। ধারা ঋণ নিয়ে ফেরত দেওয়ার হারও বেশি। এ জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসা-বাণিজ্যকে বিশেষ বিবেচনায় নিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
জেডএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।