ঢাকা, বুধবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ মে ২০২৪, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলাদেশকে ১.১১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
বাংলাদেশকে ১.১১ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

ঢাকা: পাঁচ প্রকল্পে ১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার বা ১১৮ দশমিক ৮ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৮১ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা।

 

শৈশবের বিকাশ, মাধ্যমিক শিক্ষা, নদীর তীর সুরক্ষা ও নাব্যতা বাড়ানো, শহুরে প্রাথমিক স্বাস্থ্য এবং গ্যাস বিতরণ দক্ষতার জন্য এ ঋণ বিতরণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে পাঁচ প্রকল্পের ঋণ চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান ও বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক চুক্তিতে সই করেন।

বিশ্বব্যাংক জানায়, বাংলাদেশ এনহ্যান্সিং ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড বেনিফিটস ফর আর্লি ইয়ারস প্রজেক্টে ২১ কোটি ডলার দেবে সংস্থাটি। ঝুঁকিপূর্ণ বা দরিদ্র পরিবারের প্রায় ১৭ লাখ সন্তানসম্ভবা নারী এবং ৪ বছরের কমবয়সী শিশুর মায়েদের নগদ অর্থ দেওয়া হবে।

এ ছাড়া, লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন অপারেশন প্রজেক্টে ৩০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। শিক্ষার মান উন্নত করে মাধ্যমিক শিক্ষাকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে প্রকল্পটি। কোভিড-১৯ চলাকালীন শিক্ষার ক্ষতি পুনরুদ্ধারে এবং ভবিষ্যতের ধাক্কা মোকাবিলায় প্রকল্পটি সহায়ক হবে।  

প্রকল্পটি ক্লাসের শিক্ষার সঙ্গে অনলাইন শিক্ষার প্রবর্তন করবে। প্রকল্পের আওতায় ঝরে পড়ার হার কমাতে ৮০ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেবে বিশ্বব্যাংক। ৫ হাজার স্কুলে সক্রিয়ভাবে যৌন হয়রানি ও প্রতিরোধ কমিটি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করবে এ প্রকল্প।

বিশ্বব্যাংক আরও জানায়, যমুনা নদীর টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে ১০ দশমিক ২ কোটি ডলার ঋণ দেবে সংস্থাটি। যমুনা নদীর তীর সুরক্ষা এবং নাব্যতা উন্নত করতে সাহায্য করবে প্রকল্পটি। নদীর তীর ক্ষয় এবং বন্যা থেকে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমি রক্ষা করার পাশাপাশি মানুষকে বাস্তুচ্যুতি থেকে বাঁচাবে প্রকল্পটি। এর আওতায় নদীর পর্যাপ্ত গভীরতার সঙ্গে নেভিগেশন চ্যানেলগুলোকে উন্নত করা হবে, যা সারা বছর বড় কার্গো জাহাজগুলোকে চলাচলে সাহায্য করবে। এ প্রকল্প অভ্যন্তরীণ পানি পরিবহন ও বাণিজ্য পুনরুজ্জীবিত করবে এ নৌপথে।

প্রিপেইড মিটারিং সিস্টেমের মাধ্যমে গ্যাস বিতরণ খাতে ৩০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। গ্যাস ব্যবহার দক্ষতা উন্নত করতে এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহারে আরও শক্তিশালী করবে। ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে ১ দশমিক ২ মিলিয়নেরও বেশি প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হবে প্রকল্পের মাধ্যমে।  

প্রিপেইড গ্যাস মিটার এবং উন্নত মনিটরিং সিস্টেমে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে এবং গৃহস্থালি ও শিল্প ব্যবহারকারীদের জন্য গ্যাস বিল কমাতে প্রকল্পটি অবদান রাখবে বলে জানায় সংস্থাটি।

নগর স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা উন্নয়ন প্রকল্পেও ২০ কোটি ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, সাভার ও তারাবো পৌরসভায় বাস্তবায়িত হবে। ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগসহ সাধারণ অসুস্থতার চিকিৎসা, প্রতিরোধের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা উন্নত করবে। মশা নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, এবং আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগকেও সহায়তা করবে। এটি নারীদের জন্য প্রসবপূর্ব পরিষেবাগুলি উন্নত করতে সাহায্য করবে, যার লক্ষ্যমাত্রা আড়াই লাখ গর্ভবতী নারী।

এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, দারিদ্র্যমুক্ত করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পাশে থাকবে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ এক হয়ে কাজ করছে।  

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকে দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়তে চায়। সে ধারাবাহিকতায় লাখ লাখ বাংলাদেশিকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে। এ প্রকল্পগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সন্তানদের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে কাজ করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।