বরিশাল: দাম বাড়াতে বরিশালের আড়তগুলোতে গরুর কাঁচা চামড়ার আমদানি গত বছরের থেকে তুলনামূলক বেশি থাকলেও, ছাগলের চামড়াতে অনীহা ব্যবসায়ীদের। ফলে এবারও মূল্যহীন অবস্থা রয়েছে ছাগলের চামড়া।
বরিশাল নগরের হাটখোলা ও পদ্মাবতী এলাকার তিন-চারজন ব্যবসায়ী কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে কিনছেন। তারা কেউই ছাগলের চামড়ার দাম করেননি। ফলে পরিবহন ভাড়া আর শ্রম দিয়ে সংগ্রহ করা ছাগলের চামড়াগুলো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনেই ফেলে রেখে চলে যান সংগ্রহকারীরা।
হাইড অ্যান্ড স্কিন অ্যাসোসিয়েশন বরিশালের সভাপতি বাচ্চু মিয়া বলেন, গরুর চামড়া নিয়ে আসলে কাউকেই ফেরাতে চাচ্ছি না। দর-দাম করে রেখে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে ছাগলের চামড়া নিতে চাই না। ছাগলের একটি চামড়ার পেছনে শ্রম দিয়ে সংরক্ষণ করতে যে খরচ হবে তা ট্যানারি মালিকরা দেবেন না।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ছাগলের চামড়ার কোনো মূল্য ওঠে না বরিশালের বাজারে। তারপরও অনেকেই ছাগলের চামড়া নিয়ে আসছেন কিন্তু আমি নিরুপায় তা নিতে পারছি না। তাই ফেরত নিয়ে যেতে বলি, কিন্তু বেশিরভাগেই ফেরত না নিয়ে ফেলে রেখে যাচ্ছেন।
আর মাঠ পর্যায় থেকে চামড়া সংগ্রহকারীরা বলছেন, গতবারের থেকে গরুর চামড়ার দর কিছুটা বেশি, তবে ছাগলের চামড়ার জন্য কোনো টাকাই দিতে চাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
মর্তুজা নামে এক চামড়া সংগ্রহকারী জানান, সাধারণত দর পড়ে যাওয়ার পর থেকে গত কয়েকবছর মাদরাসাগুলো চামড়া সংগ্রহ করেন। তবে এবার দাম বাড়াতে মাদরাসা ছাড়াও ব্যক্তি পর্যায়ে অনেকে চামড়া সংগ্রহ করছেন, তবে তারা বাজারের অবস্থা না বুঝে এবারে ছাগলের চামড়াও সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু ছাগলের চামড়ার কোনো দামই দিতে চান না পাইকাররা। তাই বাধ্য হয়ে ছাগলের চামড়া ফেলে দিতে হয়েছে, কিন্তু যদি ৫০ টাকা করেও কেউ দিত, তাহলে অন্তত গাড়ি ভাড়ার খরচ উঠতো।
অপরদিকে নগরের পদ্মাবতী এলাকার ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান মাসুম বলেন, সময়মতো সংরক্ষণ না করলে চামড়া নষ্ট হয়ে যায়, তাই গরুর চামড়া সংরক্ষণেই সবাই ব্যস্ত থাকি। কারণ ট্যানারিতে পৌঁছানোর আগে নষ্ট হলে সব লোকসান আমাকেই গুনতে হবে। আর এর মধ্যে ছাগলের চামড়া কেনার সুযোগই নেই। এর পেছনে এখন দেওয়া সময়, অর্থ ও শ্রম সবই বৃথা যাবে।
তিনি বলেন, আমাদের এ অঞ্চলে মাঝারি সাইজের চামড়া বেশি, তবে মান ভালো। আর এবারে গরুর চামড়ার তুলনামূলক আমদানি গতবারের থেকে ভালো আছে, সেদিকেই মনোযোগ দিতে চাই। হাতে থাকা টাকার সবটাই সেখানে ব্যয় করতে চাই।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০২৪
এমএস/আরআইএস