ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেশি-বিদেশি আমে জমজমাট বান্দরবান বাজার

কৌশিক দাশ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৪
দেশি-বিদেশি আমে জমজমাট বান্দরবান বাজার

বান্দরবান: দেশি-বিদেশি আমে জমজমাট হয়ে গেছে বান্দরবান বাজার। বান্দরবান বাজারের বিভিন্ন স্থানে এখন বিক্রি হচ্ছে দেশি জাতের রুপালি (আম্রপালি), রাংগোয়াই আর বিদেশি জাতের আম মিয়াজাকি, কাটিমন, কিউজাই, ব্রুনাই কিং, ব্যানানা ম্যাংগোসহ বিভিন্ন ধরনের আম।

জেলা সদরের বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, আকার ভেদে রুপালি আর রাংগোয়াই ৬০-১০০ টাকা কেজি দরে আর বিদেশি জাতের আম কাটিমান ১৫০-১৮০ টাকা, কিউজাই ১২০-১৫০ টাকা, ব্রুনাই কিং ১৫০-১৮০ টাকা আর ব্যানানা ম্যাংগো ২০০-২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আম কিনতে আসা মো. রাফি বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে মৌসুমি ফল পাওয়া যাচ্ছে। নানা ধরনের ফল বাজারে এখন রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে দেশি-বিদেশি আম। বান্দরবানের ফলগুলো এমনিতে পুষ্টিতে ভরপুর আর পোকা কম, তাই এখন বাজার থেকে আম কিনছি। আর দামও হাতের নাগালে।

বিদেশি আম কিনতে আসা মো. লোকমান বাংলানিউজকে জানান, এক সময় বান্দরবানে শুধু দেশি আম উৎপাদন হলেও এখন বিদেশি আমও পাওয়া যাচ্ছে। আর পাহাড়ের জলবায়ু ও আবহাওয়া ভালো হওয়ায় আমগুলো প্রচুর মিষ্টি হচ্ছে। বিদেশি জাতের আম ব্যানানা ম্যাংগো ২৭০ টাকা কেজিতে কিনেছি। বান্দরবানের আমের স্বাদ ভোলা মতো নয়।

জেলা সদরের পাইকারি ফল ব্যবসায়ী আফসার বাংলানিউজকে জানান, পাহাড়ে বিশুদ্ধ বাতাসে এখন জন্মাচ্ছে টসটসে দেশি-বিদেশি আম। এ বছর আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচু, ড্রাগন ফলের ভালো ফলন হয়েছে। স্থানীয় হাটবাজারগুলোতে এখন তাল, লিচু, কাঁঠালের পাশাপাশি প্রচুর দেশি-বিদেশি আম পাওয়া যাচ্ছে আর দামও ক্রেতার হাতের নাগালে।  

তিনি বাংলানিউজকে আরও জানান, এখানে উৎপাদিত ফলগুলো ফরমালিনমুক্ত আর তাই বান্দরবান বাজারের পাশাপাশি বান্দরবানের উৎপাদিত ফলগুলো কেরানীহাট, আমিরাবাদ, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে সহজেই।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বান্দরবানের সাত উপজেলার প্রচুর ফল উৎপাদন হয় আর জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি উপজেলার পাশাপাশি জেলা সদরের চিম্বুক এলাকায় প্রচুর আম উৎপাদন হয়। পার্বত্য জেলা বান্দরবানে প্রচুর ফল উৎপাদন হয় আর প্রচুর চাহিদা এ জেলার দেশি-বিদেশি আমের।  

এদিকে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে কৃষির উন্নয়নে চাষিদের বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, বীজ, সার ও কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বান্দরবানে এখন ফল উৎপাদন বাড়ছে।  

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বান্দরবানের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. হাসান আলী বাংলানিউজকে জানান, বান্দরবানে এ মৌসুমে প্রচুর আম উৎপাদন হয় আর দেশি জাতের পাশাপাশি বিদেশি জাতের আম চাষ করে বান্দরবানের চাষিরা ভালো দাম পান।  

তিনি বাংলানিউজকে আরও জানান, গত বছর প্রায় পাঁচ মেট্রিকটন বিদেশি জাতের আম বান্দরবান থেকে যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ড ও কাতারে রপ্তানি করা হয়েছে। রুমা উপজেলা ও লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুটি বাগান থেকে এ পাঁচ মেট্রিকটন আম ঢাকায় পাঠানো হয়, তারপর ঢাকা থেকে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে আমগুলো বিদেশে পাঠানো হয়। এ বছরও বান্দরবানের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে আম পাঠানো হচ্ছে।  

বান্দরবানের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো.হাসান আলী আরো বাংলানিউজকে জানান, বান্দরবানে ফল-ফলাদির উৎপাদন বাড়াতে কৃষি কর্মকর্তারা দুর্গম পাহাড়ের আনাচে কানাচে ছুটে যাচ্ছেন আর কৃষকদের পরামর্শের পাশাপাশি ফল-ফসল বাজারজাত করতে সহায়তা করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।